সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সাতক্ষীরায় সওজের উচ্ছেদ অভিযান, কান্না থামছে না আশ্রয়হীনদের

সাতক্ষীরায় সড়কের দুই ধারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে কান্নায় ভেঙে পড়েন আশ্রয়হীন এক নারী। ছবি : কালবেলা
সাতক্ষীরায় সড়কের দুই ধারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে কান্নায় ভেঙে পড়েন আশ্রয়হীন এক নারী। ছবি : কালবেলা

সাতক্ষীরায় সড়কের দুই ধারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। সোমবার (১ জুলাই) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা শহরের নিউমার্কেট মোড় থেকে এ অভিযান শুরু হয়। সড়ক ও জনপদ বিভাগ খুলনার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ানুর রহমানের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযানে এ সময় সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজ বলেন, সাতক্ষীরা শহর থেকে ভেটখালী পর্যন্ত ৬২ কিলোমিটার সড়কের ধারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। এর আগে বারবার মাইকিং করে এবং নোটিশের মাধ্যমে দখলদারদের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হলেও তারা তা সরিয়ে না নেওয়ায় এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এরইমধ্যে শহর থেকে ভেটখালী পর্যন্ত চার লেন সড়কের টেন্ডারও সম্পন্ন হয়েছে। সড়কের জায়গা উদ্ধারের পর বাকি কার্যক্রমও শুরু হবে।

এদিকে ইটাগাছা এলাকার খোকন বিশ্বাসসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, পূর্বে তাদের কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। রাস্তার পাশে থাকা একটি স্কাভেটর মেশিনও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মেশিনটি হস্তান্তরযোগ্য হলেও কোনো সুযোগ না দিয়ে ভেঙে দেওয়ার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তারা। এ ছাড়া রাস্তার ধারে বসবাসকারী গরিব মানুষগুলোও পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। এমনকি ঘরে থাকা খাবারগুলোও সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

ইটাগাছা বস্তির জবেদা বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, বৃষ্টির দিনে প্রতিবন্ধী মেয়েদের নিয়ে কোথায় যাব? কোথায় থাকবো? কী হবে আমাদের? ভিক্ষা করে সংসার চালায়। দুই প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে খুপড়ি ঘর বেঁধে বহুবছর ধরে এখানে থাকি। স্বামী ছিল, সেও ছেড়ে চলে গেছে। যে ঘরটি ছিল তাও কেড়ে নিল। এখন যাব কোথায়?

জবেদার মতো গৃহহীন হয়ে পড়েছে রোকেয়া, লিলি, জাহারানা, রিক্তাসহ অসংখ্য নারী প্রধান পরিবার। এদের কেউ স্বামী পরিত্যাক্তা, কেউবা বিধবা। রাস্তার পাশের সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমিতে সন্তান-সন্তানাদি নিয়ে বসবাস করতেন তারা। তবে, এক দুই বছর নয়, এদের কেউ কেউ এ বস্তিতে ঠাঁই নিয়েছেন দুই তিন যুগ আগে।

জবেদার ঠিক পাশে ঘর থেকে জিনিসপত্র বের করে নিয়ে মাঠের ধারে নাতনিকে নিয়ে বসে ছিলেন জামের আলী। কান্নাজিড়ত কণ্ঠে তিনি বলেন, পথে বসে গেছি। এই ছোট বাচ্ছা নিয়ে কোথায় যাব জানি না। যা ছিল সব ভেঙে চুরে দেছে। সব শেষ। আল্লাহই জানে আমাদের কপালে এখন কী আছে।

রেশমা নামে আরেক নারী বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে এ জায়গায় থাকি। এখন আমাদের আর মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, সড়ক উন্নয়ন খুবই কাঙ্ক্ষিত। কিন্তু আশ্রয় হারানো মানুষগুলো যাবে কোথায়? বার বার বলা সত্ত্বেও তাদেরকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন মানুষগুলোকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে তিনি যেন নির্দেশ প্রদান করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কোয়ার্টার ফাইনালেই ক্রুসকে অবসরে পাঠাতে চায় স্পেন

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা মিথ্যা : বরকত উল্লাহ বুলু

মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের জন্য এনআইডি কার্যক্রম বিষয়ক মতবিনিময় সভা

অপুকে ছাগলের বাচ্চার সঙ্গে তুলনা করলেন বুবলী

উইম্বলডন ২০২৪ / দ্বিতীয় রাউন্ডে জোকোভিচ, ভন্দ্রোসোভার বিদায়

আওয়ামী লীগ নয়, জিয়া, খালেদা, এরশাদ দেশ বিক্রি করেছেন : প্রধানমন্ত্রী

ফল উৎসব আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ : আব্দুস সালাম 

সমুদ্রসম্পদ আহরণে সব সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে : বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

এমপি আনার হত্যা, যেভাবে পালিয়ে যান ফয়সাল

নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দুই কোরিয়ার

১০

যমুনার গর্ভে বিলীন ৫ শতাধিক বাড়িঘর

১১

প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং সফরে উন্নয়ন ইস্যু প্রাধান্য পাবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

১২

মুম্বাইয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রোহিতদের সংবর্ধনা

১৩

এমপি আনার হত্যা : এবার ফয়সালের দোষ স্বীকার

১৪

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী

১৫

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার পরিকল্পনা নেই : জনপ্রশাসনমন্ত্রী

১৬

দেশকে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিয়েছে সরকার : নিতাই রায়

১৭

সুনীল অর্থনীতিকে মূল অর্থনীতিতে কাজে লাগাতে হবে : প্রতিমন্ত্রী

১৮

আলমগীর হোসেনের ওপর হামলার প্রতিবাদে উদীচীর সমাবেশ

১৯

জামিন পেলেন ছাত্র মৈত্রীর সম্পাদক অদিতি

২০
X