যশোরের অভয়নগরে ভুল অপারেশনে ইতি বেগম নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
মৃত ইতি বেগম (২২) দর্শনা উপজেলার রাজের স্ত্রী ও অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী গ্রামের আরশাব শেখের মেয়ে।
রোববার (৩০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় উপজেলার নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রা.) হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালটি ঘেরাও করে আন্দোলন করে। পরে অভয়নগর থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে মৃত নারীর পক্ষে রফিকুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এই হাসপাতালে অনিয়মের কোনো শেষ নেই। প্রায়ই এখানে চিকিৎসাজনিত কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আমরা এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। আমরা চাই ভুল চিকিৎসার অবসান হোক এবং এই নারীর মৃত্যুর সঠিক বিচার চাই।
জানা গেছে, শনিবার (২৯ জুন) অন্তঃসত্ত্বা ইতি ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালে ভর্তি হন। রাতেই ডাক্তার মঞ্জুরুল মোরশেদ ওই তাকে সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এ সময় একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। পরে ইতি রাত ৩টার পর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার অবস্থা খারাপ দেখে রোববার খুলনায় রেফার করেন ডাক্তার মঞ্জুরুল মোরশেদ। স্বজনরা খুলনায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
পরে এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা ওই হাসপাতাল ঘেরাও করে আন্দোলন করতে থাকে। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে বিষয়টি বসাবসি করে মিমাংসার আশ্বাসে উত্তেজিত জনগণ আন্দোলন বন্ধ করে।
সূত্রে জানা গেছে, নওয়াপাড়া ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালে এর আগেও ভুল সিজারিয়ান অপারেশনে অনেক রোগীর মৃত্যু হলেও অজানা কোনো কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে দিন দিন ওই হাসপাতালে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। যার সবশেষে ঘটল এই নারীর মৃত্যু।
এ বিষয়ে ফাতেমা (প্রাঃ) হাসপাতালের ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম বলেন, ডাক্তার সময় মতো সঠিক চিকিৎসা করার পরেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে আমরা খুলনা পাঠিয়েছি। ওই রোগীর আইসিইউ খুব দরকার ছিল। আমাদের চিকিৎসায় কোনো ভুল নেই।
চিকিৎসক মঞ্জুরুল মোরশেদ মুঠোফোনে জানান, ভুল কোমো চিকিৎসা নয়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে আমরা দ্রুত খুলনায় পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু এভাবে ওই নারীর মৃত্যু হবে ভাবতেও পারছি না। এই বলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন। এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওহিদুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করলেও ফোনটি রিসিভ হয়নি।
ভবানীপুর থানার ওসি এসএম আকিকুল ইসলাম বলেন, ফতেমা প্রাইভেট ক্লিনিক উত্তেজিত জনতা ঘেরাও করে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
মন্তব্য করুন