দেশে হাজার হাজার শিক্ষিত ছেলেমেয়ে চাকরির অভাবে বেকারত্ব জীবনযাপন করছে। তাদের স্বাবলম্বী করতে সরকারিভাবে সাতক্ষীরার আশাশুনিতে গড়ে তোলা হয়েছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এটি এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে নামকরণ করা হলেও বয়সভিত্তিক বেকারদের কর্মসংস্থান গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
কিন্তু শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে নির্মাণ করা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অতি মূল্যবান যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শুধু জনবলের অভাবে। ব্যবহার না করার ফলে আশাশুনি এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সরকারি কোটি টাকার ওয়ার্কশপ মেশিনগুলো ইতোমধ্যে অকেজো হয়ে গেছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন। মেশিনগুলো ২০১৪ সালে আশাশুনি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত নিয়োগ দেওয়া হয়নি দক্ষ প্রশিক্ষক। ফলে অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হতে বসেছে সরকারি কোটি টাকার সম্পদ।
দাপ্তরিক সূত্রে জানা গেছে, আশাশুনি এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৪টি সেক্টরে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যার মধ্যে উড ওয়ার্কস ও উড কার্ভিং সেক্টরে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন তরিকুল ইসলাম। ড্রেস মেকিং ও টেইলারিং সেক্টরে আলতাফ হোসেন প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। এনিমেল পশু ও হাঁসমুরগি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত আছেন জেসমিন আরা। এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষক নিয়োজিত থাকলেও দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রাফট প্রশিক্ষণ মেশিনারিজ পদটি শূন্য থাকায় ওয়ার্কশপ প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ এলাকার বেকার শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে চাইলে আশাশুনি এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (সহকারী পরিচালক) ফারুক হোসেন বলেন, কোনো ছবি বা ভিডিও ফুটেজ নেওয়া যাবে না ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিষেধ আছে।
২০১৪ সাল থেকে পদটি শূন্য রয়েছে স্বীকার করে তিনি বলেন- সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরকে একাধিকবার চাহিদাপত্র প্রেরণ করলেও ওই পদের কোনো সুফল মেলেনি।
সাংবাদিকদের ভালো নিউজ করার মানসিকতা নেই উল্লেখ করে প্রতিবেদন করতে নিষেধ করে তিনি আরও বলেন- এতদিন আপনারা কোথায় ছিলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেহেতু দায়িত্ব নিয়েছেন সেহেতু তিনি মাথা ঘামাবেন না, সঙ্গে সাংবাদিকদেরও মাথা ঘামাতে নিষেধ করেন।
অন্যদিকে সাতক্ষীরা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক সন্তোষ কুমার নাথের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন- মূলত আশাশুনিতে অবস্থিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৫টি শাখায় প্রশিক্ষণ দেওয়া ব্যবস্থা থাকলেও ৪টি চলমান আছে, বাকি একটি জনবলের অভাবে বন্ধ আছে দীর্ঘদিন। ওপর মহলকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশা করি লোক নিয়োগ হলে আমাদের এখানে পোস্টিং দেওয়া হবে।
অপরদিকে সরকারি সম্পত্তি রক্ষার্থে আশাশুনি এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অতি দ্রুত জনবল নিয়োগসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
মন্তব্য করুন