যশোরের মনিরামপুরে মঙ্গলী ওরফে পলি নামে এক হিজড়াকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় জড়িত কথিক প্রেমিক রমজান আলী বাবু (২৬) গ্রেপ্তার হয়েছে।
একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দাসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
রোববার (৩০ জুন) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সামনুর মোল্লা সোহান।
এর আগে শনিবার (২৯ জুন) বিকেলে যশোর শহরের মুড়লি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
গ্রেপ্তার বাবু মনিরামপুর পৌরসভার কামালপুর গ্রামের আহম্মেদ আলীর ছেলে। আর মঙ্গলী ওরফে পলি উপজেলার ঘুঘুদাহ গ্রামের আব্দুল খালেক গাজীর সন্তান।
জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার মঙ্গলী কয়েক বছর ধরে মাছনা গাজীপাড়া গ্রামে জমি কিনে ঘর করে একাকী বসবাস করতেন। অনেক দিন ধরে বাবুর সঙ্গে মঙ্গলীর প্রেমের সম্পর্ক চলছিল।
ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেল বাবুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় মঙ্গলীর। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাবু তার বাড়িতে যায়। দুজন একান্তে সময় পার করে তারা শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। কিছুক্ষণ পর মঙ্গলী ঘুমিয়ে পড়েন। সেই সুযোগে বাবু ওই ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে মঙ্গলীর ঘুম ভেঙে যায়। সে বাবুকে জড়িয়ে ধরে চুরির অপরাধে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেয়। দুজনের মধ্য ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ঘরে থাকা দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মঙ্গলীকে হত্যা করে বাবু। মৃত্যু নিশ্চিত করে তার গহনা ও নগদ আড়াই হাজার টাকাসহ মালামাল নিয়ে বাড়ির ছাদে ওঠে প্রাচীর টপকিয়ে বাবু পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে বাবু।
জেলা গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক মফিজুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলীকে হত্যা করে চুরির মালামাল নিয়ে পালাতে যশোর শহরে যায় বাবু। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, রহমান আলী বাবু ছিচকে চোর হিসেবে এলাকায় পরিচিত। ইতোপূর্বে চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বেশ কয়েকবার হাজতবাস করতে হয়েছে।
এদিকে, ঘটনার পরদিন শুক্রবার (২৮ জুন) দিনভর মঙ্গলীর সাড়া শব্দ না পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে বাড়ির সিঁড়িঘর থেকে মঙ্গলীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠান হয়।
অপরদিকে, শনিবার (২৯ জুন) সকালে নিহতের ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, মঙ্গলী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাবুকে গ্রেপ্তার করে আদালত পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন