মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ‘চেয়ার দখলে নিতে’ অনিয়মের মধ্য দিয়ে আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের স্কুলের কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ২৭ জুন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা ফখর উদ্দিন চৌধুরী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফান্ড আত্মসাৎ ও চেয়ার দখলে নিতে আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের কমিটি দখলে নিতে চায় একটি সিন্ডিকেট। সদ্য উপজেলা নির্বাচনকালীন সময়ে এ বিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক যখন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, সেই সময়ে কারও মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে কাগজে কলমে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে রেকর্ড করা হয়। যারা প্রার্থী হয়েছিলেন কৌশলে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করিয়ে সিলেকশনে অভিভাবক প্রতিনিধি মনোনীত করা হয়। কোনো ভোটাধিকার প্রয়োগ করা হয়নি।
এ ঘটনায় অনেক অভিভাবক ও এলাকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা সদস্য হিসেবে অনেকের কাছে বিচার প্রার্থী হয়েছেন। কারও মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে একটি সিন্ডিকেট বাহিনী তাদের মনোনীত লোকদের অভিভাবক সদস্য মনোনীত করে তাদের মধ্যে থেকে একজনকে সভাপতি নির্বাচিত করার পূর্ব নকশা করে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় গেল কয়েক বছর ধরে দেশের জ্ঞানী-গুণীদের পরামর্শ নিয়ে একটি যুগোপযোগী স্কুল পরিচালনা কমিটি নির্বাচনের প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে প্রক্রিয়ায় এ চক্রটি নির্বাচন করতে যাচ্ছে তা নতুন ম্যানেজিং কমিটি পরিচালনা গাইডলাইন-২০২৪ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। রোববার চক্রটি পূর্ব পরিকল্পিত সভাপতি নির্বাচন মঞ্চায়িত করতে যাচ্ছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের বৃন্দাবনপুরে অবস্থিত আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয় ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ২৬ মে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেন উপজেলা পল্লি উন্নয়ন কর্মকর্তা। ২৩ জুন অভিভাবক সদস্য ৫ পদে ৫ জনের বেশি প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তারা নির্বাচিত হন।
অভিযোগ উঠেছে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া বাকি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জোরপূর্বক প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছেন একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ফখর উদ্দিন চৌধুরী জানান, কমিটি ও চেয়ার নিজেদের দখলে নিতে একটি চক্র- যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছেন। অনেককে ভয় দেখিয়েও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। মূলত স্কুলে ফান্ড লুটপাট করা তাদের মূল লক্ষ্য।
বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুল আহাদ বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ প্রিসাইডিং অফিসার চালান। বর্তমান পরিচালনা কমিটি এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এখন কে কারা কখন কীভাবে নির্বাচিত হয়েছে প্রিসাইডিং অফিসার বলতে পারবেন, এটা তার দায়ভার।
ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সাঈদ নাজমুল হাসান বলেন- অভিভাবক, শিক্ষক ও দাতা সদস্য পদে ৯টি পদে ১০ জন প্রার্থী ছিলেন। একজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় ভোটগ্রহণ হয়নি। যার কারণে সব পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন বলেন, আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। আমি প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ করতে পারি। এর বেশি হস্তক্ষেপে করার সুযোগ নেই। এখন কারও অভিযোগ থাকলে সেটা সমাধানের জন্য আদালতে যেতে পারবেন।
মন্তব্য করুন