শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন নহর ইনিশিয়েটিভসের ফেলোশিপ প্রোগ্রামের প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থীদের সমাবর্তন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। একইসঙ্গে ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে বরণ করে নেওয়া হয়েছে ফেলোশিপ প্রোগ্রামের নতুন প্রশিক্ষণার্থীদের।
গত শনিবার সাভার সি আরপি সেন্টারের অডিটরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজডের (সিআরপি) প্রতিষ্ঠাতা ও নহর ইনিশিয়েটিভের চেয়ারম্যান ভ্যালেরি অ্যান টেইলর। ভ্যালেরি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের পর বর্তমানের বড় বিজয় হচ্ছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী করার বিজয়। যে বিজয়ের মাধ্যমে আমরা শুধু বাংলাদেশেই না বিশ্বের আরও ৯টি দেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা হয়েছে। ভ্যালেরি অ্যান টেইলর ফেলোশিপ সম্পন্ন করা ব্যক্তিদের কর্মজীবনের জন্য শুভকামনা ব্যক্ত করেন।
প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ববি হাজ্জাজ বলেন, আজকের এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় প্রতিবন্ধকতা কোনো বাধা নয়। একটু ভিন্নভাবে দেখলে তারা এগিয়ে যাবে, বিশ্ব জয় করবে। তিনি আরও বলেন, আমি আশা করি নহর ইনিশিয়েটিভস সর্বদা সবাইকে পাশে পাবে। নহর ইনিশিয়েটিভস এ ধরনের কাজে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমের দেশের জনশক্তি বৃদ্ধি করে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশেকে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে দাঁড় করাতে পারবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর ডিজিটাল বিভাগের প্রধান জাবেদ সুলতান পিয়াস। তিনি বলেন, এধরনের উদ্যোগ নেওয়ার নহর ইনিশিয়েটিভ প্রসংশার দাবিবার। আশা করি এ ধারাবাহিকতা নহর ইনিশিয়েটিভ সবসময় ধরে রাখবে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে নহর ইনিশিয়েটিভের এ ধরনের কাজের জন্য সাধুবাদ জানান তিনি।
এ সময় ইনিশিয়েটিভসের পরিচালক এইচ এম আতিফ ওয়াফিক বলেন, আমরা সবার কাছে সাহায্য চাই। সর্বপ্রথন আমাদের প্রয়োজন সবার দোয়া। সবার দোয়ার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ নয় শুধু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্পেশাল এসব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারব।
ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুল হক সোহান বলেন, নহর ইনিশিয়েটিভের পাশে ইউনিভার্সিটি অফ স্কলার্স সবসময় পাশে থাকবে। প্রতি বছর ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সে নহর ইনিশিয়েটিভ থেকে দুজন শিক্ষার্থী ফুল ফ্রি স্কলাশিপে পড়াশোনার করার সুযোগ পাবে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক ফরিদ খান বলেন, আজকের এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা এই বিষয়ে অবহিত হয়েছি এবং প্রমাণ করতে পেরেছি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুযোগ দিলে বিশ্বের বুকে নিজেকে দৃষ্টান্ত হিসেবে দাঁড় করাতে পারে। আমি আপনাদের কাছে সবিনয় নিবেদন করি, আমাদের সুযোগ দিন, আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে দিন। আমরা প্রতিষ্ঠা করব এমন এক সমাজ যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের নেতৃত্বের গুণাবলি এবং তাদের কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে প্রশংসিত হবে, সমাদৃত হবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিকুল আফজালসহ বিভিন্ন গণমান্যব্যক্তিরা।
প্রসঙ্গত, নহর ইনিশিয়েটিভস ২০২০ সাল থেকে অটিজম ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তীদের কল্যাণে নানা ধরনের জনসেবামূলক কাজ পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠান্টির একটা ফেলোশিপ প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আওতায় ২০০ প্রতিবন্ধী প্রশিক্ষনার্থী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আওতায় প্রশিক্ষণ নেওয়া ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে নহর ইনিটিয়েটিভস। পাশাপাশি রেডিও, টেলিভিশন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় নহর ইনিশিয়েটিভ নিয়মিত বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে যাচ্ছে বলে জানান নহর ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ফরিদ খান এবারের ফেলোশিপ প্রোগ্রামের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পিআর পার্টনার হিসেবে ছিলো গ্লোবাল পিআর।
মন্তব্য করুন