‘ইনোভেশন ফর ইক্যুয়ালিটি’ বা ‘সমতার জন্য উদ্ভাবন’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শনিবার (৪ নভেম্বর) আয়োজিত হলো টেড-এক্স গুলশানের দ্বিতীয় আসর। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন দেশি-বিদেশি ১৬ জন বক্তা। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং সাবেক প্রধান সচিব আবুল কালাম আজাদ। অনুষ্ঠানটি অসাধারণ বক্তাদের একত্রিত করার পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করেছে।
ড. শিরীন শারমিন তার বক্তব্যে দেশের প্রথম নারী স্পিকার হওয়ার গল্প তুলে ধরেন। তার বক্তব্যে কীভাবে উদ্ভাবন ও সমতা পাবলিক সেক্টরে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তা উঠে আসে। তিনি বলেন, উদ্ভাবন শুধু প্রাইভেট সেক্টরেই সীমাবন্ধ নয় বরং এটি পাবলিক সেক্টরের পরিবর্তনের চালিকা শক্তি এবং নারীদের নেতৃত্বকে ক্ষমতায়িত করে।
সাবেক মুখ্যসচিব মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সমতার অর্জনের জন্য উদ্ভাবনই আমাদের চালিকাশক্তি হওয়া উচিত এবং টেডএক্স গুলশান এই বার্তাটি ছড়াতে আবারও তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে।
প্রাভিনা ইয়াগনামভাত, বোয়িং ইন্ডিয়ার চিফ অফ স্টাফ বলেন, উদ্ভাবনই সমতার চাবি, আমার জার্নিই প্রমাণ করে, একজনই পরিবর্তন আনতে পারে।
বিবিসি স্টোরিওয়ার্ক্স-এর কন্টেন্ট স্ট্রাটেজিস্ট অঙ্কিতা বকশী তার বক্তব্যে স্টোরিটেলিংয়ের ক্ষমতার কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের গল্পের মাধ্যমে আমরা বাধা অতিক্রম করতে পারি এবং সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষকে একত্রিত করতে পারি।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের হেড অফ কমিউনিকেসন মো. আবুল কাইয়ুম তার বক্তব্যে সমতা রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা এবং তার ব্যক্তিগত জার্নির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, টেড-এক্স গুলশান (TEDxGulshan) পরিবর্তনমূলক আলোচনায় প্রভাবক হিসবে কাজ করেছ এবং আমি এতে অংশগ্রহণ করতে পেরে আনন্দিত।
এ ছাড়াও বক্তা হিসেবে ছিলেন, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ভাইস চ্যান্সেলর ড. রুবানা হক, বাংলাদেশি গায়ক ও গীতিকার শায়ান চৌধুরী অর্ণব, কোকা-কোলা কোম্পানি, বাংলাদেশের হেড অফ মার্কেটিং আবীর রাজবীন, এটুআইয়ের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট অ্যাক্সেসিবিলিটি ভাস্কর ভট্টাচার্য, বাংলাদেশি রেডিও জকি এবং টেলিভিশন উপস্থাপক কিবরিয়া সরকার, বিবিশি স্টোরি-ওয়ার্কসের কন্টেন্ট স্ট্রাটেজিস্ট অঙ্কিতা বকশী, বাংলাদেশি ইউটিউবার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ইফতেখার রাফসান, সাবেক সেনা কমান্ডো ও ট্রায়াথলিট ইমতিয়াজ ইলাহী এবং ব্র্যাকের পিপল, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস সিনিয়র ডিরেক্ট মৌটুসী কবির।
টেড-এক্স গুলশানের আয়োজনে বক্তব্যের পাশাপাশি ছিল গান ও বিনোদনের ব্যবস্থা। শায়ান চৌধুরী অর্ণবের একোস্টিক স্টোরিটেলিং এবং ঋতু রাজের গান মাতিয়ে রাখে অংশগ্রহণকারীদের। টেড-এক্স গুলশানের অন্যতম বিশেষ দিক ছিল অন্তর্ভুক্তিমূলক নানাবিধ ব্যবস্থা। বিশেষ চাহিদাপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহণের ছিল বিশেষ ব্যবস্থা এবং ছিল সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্টারপ্রেটর।
টেড-এক্স গুলশানের কিউরেটর আশফাক জামান বলেন, আমাদের আয়োজনের সফলতার মূল কৃতিত্ব বক্তাদের। বক্তারা তাদের বক্তব্যে তাদের অভিজ্ঞতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে দর্শকদের অনুপ্রাণিত করেছেন। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের উদ্ভাবন এবং আমাদের সামাজিক মেলবন্ধন বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে পারি।
এ আয়োজনের নলেজ পার্টনার ছিল লিড একাডেমি। টেড-এক্স গুলশান আয়োজনে তারা একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। লিড একাডেমি একটি বিশ্বমানের অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম যারা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে স্টেম ও ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতির দক্ষতা দিয়ে দেশ নির্মাতাদের ক্ষমতায়ন করে।
টেড-এক্স ভিডিওগুলো টেডের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে পাওয়া যাবে। এদের মাধ্যমে ৫৩ মিলিওন মানুষের কাছে এ বক্তব্যগুলো পৌঁছে যাবে। টেড-এক্স গুলশানের স্ট্রাজেটিক পার্টনার হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গোল্ড পার্টনার হিসেবে ছিল কোকা-কোলা। সিলভার পার্টনার ছিল ডেল্টা গ্রিন লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ড্যান ফুড লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক লিমিডেট। আইসক্রিম পার্টনার– পোলার আইসক্রিম, পিআর পার্টনার– ব্যাকপেইজ পিআর, টিকেটিং পার্টনার– টিকেটিফাই এবং ইয়ুথ এঙ্গেইজমেন্ট পার্টনার– ওয়াই এস এস ই।
মন্তব্য করুন