বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সত্যকে ধারণ করে মিথ্যার সঙ্গে লড়াই করা।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) খুলনা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব বলেন।
বিএফইউজে মহাসচিব বলেন, সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ অনেক বড়। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সত্যকে ধারণ করে মিথ্যার সঙ্গে লড়াই করা। তাই সত্য নিয়ে কাজ করলে ঝুঁকি থাকে বেশি। এদিক বিবেচনায় সাংবাদিকতা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। সাংবাদিকতায় ঝুঁকি থাকবেই। ভয়কে জয় করাই সাংবাদিকের কাজ। সজাগ ও সচেতন থাকলে সৎ ও নিষ্ঠাবান সাংবাদিকরা হারিয়ে যাবে না। সাংবাদিকতার ডিকশনারি থেকে সততা ও পেশাদারিত্ব শব্দ দুটি কখনই বিলীন হতে দেওয়া যাবে না। অসৎ আর হলুদ সাংবাদিকতার মর্যাদাকে ম্লান করে দিচ্ছে।
এসময় বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, এইচ এম আলানুদ্দিন, রাশিদুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক রানা, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সভাপতি আনিসুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক হিমালয় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক এ নেতা বলেন, সাংবাদিকের অন্যতম কাজ বস্তুনিষ্ঠতা ও সত্যের আরাধনা। এজন্য সত্য ও বস্তুনিষ্ঠতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।মনে রাখবেন যে প্রতিবেদকের যোগাযোগ যত ভালো তার প্রতিবেদন তত উন্নততর এবং বস্তুনিষ্ঠ হয় এবং দর্শক, পাঠক ও শ্রোতার নিকট ততটা গুরুত্ববহন করে। অনুমান নির্ভর লিখা সাংবাদিকতা নয়। সাংবাদিক হতে হবে পুরো সত্য, আংশিক নয়।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। অপর ৩টি স্তম্ভ হচ্ছে- আইনসভা, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ। বোঝাই যাচ্ছে গণমাধ্যমের গুরুত্ব ও অবস্থান কোথায়। জনস্বার্থ অভিমুখী মুক্ত গণমাধ্যম ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পূর্ণতা পায় না। সরকার ও প্রশাসনের অসঙ্গতি ধরিয়ে দেওয়াসহ জনগণের সংগ্রামের সহযোদ্ধা হিসেবে গণমাধ্যমকে অতন্দ্রপ্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হয়। কিন্তু আজ বাংলাদেশে সেটি খুব একটা হচ্ছে না। বিশেষ করে পতিত সরকার এদেশের সাংবাদিকতার সর্বনাশ করে গেছে। একধরনের দলদাস সাংবাদিক তৈরি করে তাদের দিয়ে অসত্য লিখিয়ে গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের যে আস্থা ছিল তা নষ্ট করে ফেলেছে। সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে গণমাধ্যম হচ্ছে রাষ্ট্রের পাহারাদার। গণমাধ্যমই সঠিক পথ বাতলে দেয় যাতে সরকার, প্রশাসন ও জনগণ সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারে। গণমাধ্যম সরকার, প্রশাসন ও জনগণের প্রতিপক্ষ নয়; তবে জনস্বার্থে নজরদারি করবে। কাজেই বলিষ্ঠ ও শক্তিশালী গণমাধ্যম ছাড়া জনস্বার্থের রাষ্ট্রব্যবস্থা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারে না। রাষ্ট্রের অন্য ৩টি স্তম্ভ নড়বড়ে হয়ে গেলেও চতুর্থ স্তম্ভ শক্ত থাকলে রাষ্ট্রকে গণমুখী রাখা যায়। আর চতুর্থ স্তম্ভ নড়বড়ে হলে রাষ্ট্রব্যবস্থা গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, রাষ্ট্র বিপদগ্রস্ত হয়।
পরে খুলনা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন কাদের গনি চৌধুরী। এসময় খুলনা প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক এনামুল হক, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, রিয়ার অ্যাডমিরাল গোলাম সাদেক, রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহিন রহমান, ডিআইজি রেজাউল হক, বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার, খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শফিকুল ইসলাম মনাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন