কর্মব্যস্ত কাতার প্রবাসী বাংলাদশিদের ভিন্নরকম দিন। বাহারি রঙের ঐতিহ্যবাহী পোশাক,শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে নারী-পুরুষ উপস্থিত হচ্ছে দোহার কলেজ মাঠে। সবার সঙ্গে দেখা, গল্প, খাওয়া-দাওয়া ও বিনোদনের অপার সুযোগ। পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব, কাতারের বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা, পেশাজীবী সংগঠন বাদ যায়নি রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। এ এক মহা মিলনমেলা। যেন কাতারে এক টুকরা বাংলাদেশ।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে কাতারের রাজধানী দোহার এম এইচ এম স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণের এ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
বাংলাদেশে বিজয় দিবসের আমেজ শেষ হতে না হতেই ১৮ ডিসেম্বর কাতারের ৫৪তম জাতীয় দিবস। টানা ছুটিতে বাংলাদেশি কমিউনিটির মাঝে বিজয়ের আমেজ ছড়িয়ে দিতে চার দিনব্যাপী যৌথভাবে বিজয় মেলার আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ দূতাবাস কাতার এবং এম এইচ এম স্কুল অ্যান্ড কলেজ। জমজমাট এই মেলার পর্দা নামল শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে। কাতারে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম মেলার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
মাত্র ৪,৪১৬ বর্গমাইলের ছোট্ট দেশটিতে প্রায় ৪ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থান। কোনো উপলক্ষ পেলে উৎসব প্রিয় বাংলাদেশি কাতার প্রবাসীরা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। গত চার দিন মেলাজুড়ে সেই দৃশ্য দেখা গেল।
বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্কুলের সুদৃশ্য স্টলের পাশাপাশি, বাংলাদেশ বিমান, রেমিট্যান্স কর্মীদের উৎসাহ দিতে এক্সচেঞ্জ হাউস, নানা রকম সুবিধাসহ কয়েকটি আবাসন কোম্পানি, শীতকালীন গরম কাপড়, হাতে তৈরি প্রদর্শনী, প্রসাধনী, অলংকার, শীতের পিঠা, বাহারি রকমের বাঙালি খাবারসহ প্রায় ৫০ স্টলে বিশাল এলাকাজুড়ে সেজেছিল এই বিজয় মেলা।
অনুষ্ঠান চলাকালে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মেলায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। দেশাত্মবোধক গান, নজরুল সংগীত, রবীন্দ্র সংগীত, কবিতা আবৃত্তি যেমন মনোমুগ্ধকর ছিল, তেমনি দৃষ্টিনন্দন ছিল নৃত্য পরিবেশনা। দূতাবাস কর্মকর্তা থেকে সাধারণ প্রবাসীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক বিনোদনে মেতে উঠেছিল প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা।
বিজয় মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদ, নির্যাতিত মা-বোন ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। এ ছাড়া তিনি এ বছর জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত সবার অবিস্মরণীয় অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। একটি বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তা বাস্তবায়নে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন।
দূতাবাস কর্মী নাসরিন নীলা জানান, এ ধরনের আয়োজনে প্রবাসীদের দেশপ্রেম ও পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক নেছার উদ্দীন আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান এবং প্রতিবছর এ ধরনের মিলনমেলার সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন