লোকালাইজেশনবিষয়ক জাতীয় সেমিনারের আয়োজন করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ। সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারের সহআয়োজক হিসেবে যুক্ত ছিল অক্সফাম ইন বাংলাদেশ, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড বাংলাদেশ, কেয়ার বাংলাদেশ, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, হেলভেটাস বাংলাদেশ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও ড্যানিশ রিফিউজি কাউন্সিল।
সেমিনারের উদ্দেশ্য ছিল লোকালাইজেশনকে একটি ধারণা ও প্রক্রিয়া হিসেবে তুলে ধরা এবং এর প্রভাব ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নির্ধারণ করা। অনুষ্ঠানে সরকার, জাতিসংঘ, আইএনজিও, দাতা সংস্থা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের প্রায় ১৩০ প্রতিনিধি অংশ নেন।
এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর পরিচালক (গ্রেড-১), মো. সাইদুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। জাতিসংঘের স্থানীয় সমন্বয়কারী গুইয়েন লুইস ও বাংলাদেশে সুইডেনের দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ম্যাটিল্ডা সিয়াভসান সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখযোগ্য অন্যদের মধ্যে ছিলেন- ফারাহ কবির, কান্ট্রি ডিরেক্টর, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ; মেহরুল ইসলাম, ইন্টেরিম কান্ট্রি ডিরেক্টর- প্রোগ্রাম, কেয়ার বাংলাদেশ; মনিষ কুমার আগারওয়াল, কান্ট্রি ডিরেক্টর, কনসারন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড, সুমিত্রা মুখারজি, অপারেশন ডিরেক্টর, এশিয়া রিজিয়ন অ্যান্ড কান্ট্রি ডিরেক্টর, ড্যানিশ রিফিউজি কাউন্সিল; প্রশান্ত ভারমা, কান্ট্রি ডিরেক্টর, হেলভেটাস; আশিস দামলে, কান্ট্রি ডিরেক্টর, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ; কবিতা বোস, কান্ট্রি ডিরেক্টর, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ; সুমন সেনগুপ্ত, কান্ট্রি ডিরেক্টর, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ।
প্রতিনিধিরা লোকালাইজেশনের একটি নির্দিষ্ট ধারণা ও পরিকল্পনা উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করেছেন, যা নারী, শিশু এবং কমিউনিটির সদস্যদের অগ্রযাত্রায় সাহায্য করবে। মূল উপস্থাপকরা লোকালাইজেশনের বর্তমান কর্মপদ্ধতি, সুযোগ-সুবিধা, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। বক্তব্যে আইএনজিওগুলোর প্রত্যাশা এবং বাংলাদেশের জাতীয় এনজিওগুলোর লোকালাইজেশনের ব্যাপারে প্রস্তুতি সম্পর্কেও ধারণা তুলে ধরা হয়। এ সেশনটি একটি প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয়। যেখানে লোকালাইজেশন নিয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির ওপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শেষে লোকালাইজেশনের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের ব্যাপারে সংক্ষেপে আলোচনা করা হয় এবং ভবিষ্যতের জন্য সমন্বিত কার্যক্রমের ব্যাপারে পরিকল্পনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের স্থানীয় সমন্বয়কারী গুইয়েন লুইস বলেন, লোকালাইজেশন এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সফলতা বড় একটি অর্জন, কারণ স্থানীয় সংগঠনগুলো জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে এবং স্থানীয় কণ্ঠস্বরকে সামনে নিয়ে আসে। লোকালাইজশন মানে হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ের বৈচিত্র্যের দিকগুলোর সম্মিলনে কাজ করা এবং আমাদের সবার উচিৎ একটি একক কমিউনিটি হিসেবে অঙ্গীকার পালন করা।
বাংলাদেশস্থ সুইডেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ম্যাটিল্ডা সিয়াভসান বলেন, দেশের বাইরের সংগঠনগুলো ব্যর্থ হলেও স্থানীয় এবং জাতীয় সংগঠনগুলো সর্বপ্রথম কাজ শুরু করতে পারে কারন তারা মাঠপর্যায়ে থেকে আসল অবস্থা পর্যালোচনা করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সুইডিশ দূতাবাস নেতৃত্বে সকল অংশীদারদের নেত্রীত্বেকে সামনে এনে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় যুক্ত করবে। এর সঙ্গে তিনি তাদের সব রকম সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও দেন। ম্যাটিল্ডা সিয়াভসান সমাজের সকলকে নিয়ে এগিয়ে যাবার অঙ্গীকারকে ‘গ্র্যান্ড বার্গেইন’ হিসেবে অভিহিত করেন।
প্রধান অতিথি মো. সাইদুর রহমান বলেন, আমরা স্থানীয় এনজিওগুলোর কাজের সুযোগ প্রসারিত করার মাধ্যমে বিকেন্দ্রীকরণকে অগ্রাধিকার দেই।
তিনি তার বক্তব্যে চাহিদা ভিত্তিক তহবিল ব্যবস্থা এবং উন্নত সমন্বয়ের উপর করার গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, সঠিক মূল্যায়নের জন্য তথ্যসংগ্রহ করা এবং ডাটাবেস তৈরি করা অপরিহার্য যাতে সংস্থাগুলো স্থানীয়ভাবে তাদের প্রকল্পগুলোর কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়। একই সাথে সফল প্রকল্পসমূহের প্রামাণ্য দলিল যাতে ডিজিটাল উপায়ে সকলের জন্য সহজলভ্য করা হয়, দেই বিষয়েও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
মন্তব্য করুন