বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে আহত ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক। আহতদের চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের জন্য করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) এনআরবিসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ৪৩ আন্দোলনকারীকে ওই অর্থ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান ও পরিচালক একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, পরিচালক লকিয়ত উল্যাহ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. রবিউল ইসলাম, ডিএমডি কবীর আহমেদ, হারুনুর রশীদ ও মো. হুমায়ুন কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সাদিক কায়েম, শফিউল আলম শাহিন, আব্দুল হান্নান মাসুদ, তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী, আরাফাত হোসেন ভুইয়া, রায়হান উদ্দিন, এবি যুবায়ের, মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, সাব্বির উদ্দিন রিওন, আবিদ হাসান রাফিসহ অন্যান্য সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক উপস্থিত ছিলেন।
সমন্বয়ক সাদিক কায়েম বলেন, নতুন বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন। অধিকার আদায়ের এই আন্দোলনে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে নতুন বাংলাদেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।
সমন্বয়ক শফিউল আলম শাহিন বলেন, এনআরবিসি ব্যাংকের মতো অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানও আহত ও শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়াবে। আহত ও শহীদ পরিবারের কর্মক্ষম সদস্যদের স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা বৈষম্যমুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি। শহীদ ও আহতদের পাশে দাঁড়িয়ে এনআরবিসি ব্যাংক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। সম্প্রীতির বাংলাদেশে যার যার অবস্থান থেকে দেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই স্বাধীনতা বেহাত হতে দেওয়া হবে না। যে উদ্দেশে ছাত্র-জনতার বিপ্লব হয়েছে যে কোনো মূল্যে আমাদের সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে শহীদের রক্তের প্রতি বেইমানি করা হবে। হাজার হাজার আহত ভাইদের মূল্যায়ন তখন বাস্তবিক অর্থে করা হবে যখন ফ্যাসিবাদমুক্ত বৈষম্যহীন স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, নতুন বাংলাদেশ গঠনে এনআরবিসি ব্যাংক যেভাবে এগিয়ে এসেছে, তা প্রশংসনীয়। তিনি আশা করেন অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আসবে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে যারা স্বপ্ন দেখেছে, তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এনআরবিসি ব্যাংক পাশে থাকবে। আহতদের চিকিৎসা ও অনুদানের পাশাপাশি ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে এনআরবিসি ব্যাংক। এ ছাড়া আহত শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করবে। শহীদ পরিবারের কর্মক্ষম সদস্যদের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হবে।
ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু বলেন, ছাত্র-জনতার সব শুভ উদ্যোগের সঙ্গে এনআরবিসি ব্যাংক সবসময় থাকবে। সব অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
পরিচালক লকিয়ত উল্লাহ বলেন, যে কোনো দুর্যোগে এনআরবিসি ব্যাংক যেমন সাধারণ মানুষের পাশে থাকে আগামীতেও নতুন বাংলাদেশ এনে দেওয়া জাতির এই সূর্য সন্তানদের পাশে এনআরবিসি ব্যাংক পাশে থাকবে।
পরিচালক একেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশ গঠনে ছাত্র-জনতার পাশে থাকবে এনআরবিসি ব্যাংক। সারা দেশের মানুষের একটাই দাবি বৈষম্যহীন সমাজ কাঠামো। এনআরবিসি ব্যাংক শুরু থেকেই চেষ্টা করছে প্রতিবন্ধকতার দেওয়াল ভেঙে সমৃদ্ধি বাংলাদেশ গড়ার।
উল্লেখ্য, প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি এনআরবিসি ব্যাংক গণমানুষের কল্যাণে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রতি বছর মুনাফার ১০ শতাংশ সিএসআর কার্যক্রমে ব্যয় করে। সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতিতে সিএসআর তহবিল থেকে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ৫০ লাখ টাকা প্রদানসহ ১ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকের পরিচালকদের ব্যক্তিগত অনুদান এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। কল্যাণমুখী কর্মকাণ্ডের জন্য এনআরবিসি ব্যাংক ‘মানবিক ব্যাংক’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত হয়েছে।
মন্তব্য করুন