চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চালু করা বিশেষ ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) থেকে এ রেল আর চলাচল করবে না। ইঞ্জিন ও লোকোমাস্টার সংকটের কারণে রেল কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বিশেষ রেলটি আগামী ১০ জুন পর্যন্ত চলাচল করার কথা ছিল। অল্প সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-কক্সবাজার রেল যাতায়াত শুরু হলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল চালুর দাবি ওঠে। এ দাবি নিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী ও চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার রেলওয়ে যাত্রী কল্যাণ পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন স্থায়ীভাবে রেল চালু রাখার দাবি জানায়। এর প্রেক্ষিতে গত ঈদুল ফিতরের সময় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে ১৫ দিনের জন্য এক জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করে। পরে যাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে সেটি আগামী ১০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নতুন করে সময় না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সহকারী প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (এসিওপিএস) কামাল আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রেলওয়ের মহাপরিচালকের (ডিজি) কার্যালয় থেকে কক্সবাজার স্পেশাল-৩ ও ৪ ট্রেনটি আগামী ১০ জুন পর্যন্ত চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যান্ত্রিক বিভাগ থেকে ইঞ্জিন ও লোকোমাস্টারের সংকটের কথা জানানো হয়েছে। এ জন্য কক্সবাজার বিশেষ ট্রেন বুধবার পর্যন্ত চলবে। ৩০ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বাতিল করা হলো।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, পূর্বাঞ্চল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বিশেষ ট্রেন আগামী ৩০ মে থেকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইঞ্জিন ও লোকোমাস্টারের সংকটের কারণে এটি নিয়মিত করা হচ্ছে না। তবে এটি স্থায়ী না কি সাময়িক তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের বিশেষ ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টায় ছেড়ে কক্সবাজার পৌঁছায় সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। আবার কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছাড়ে সন্ধ্যা ৭টায়। চট্টগ্রামে পৌঁছায় রাত ১০টায়।
যাত্রাপথে ট্রেনটি ষোলশহর, জানালিহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামু স্টেশনে থামে এবং যাত্রী পরিবহন করে। মোট ১০টি বগিতে আসন রয়েছে ৪৩৮টি। বিশেষ ট্রেনে শোভন শ্রেণির আসনের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া ৪৫ টাকা, প্রথম শ্রেণি আসনের জন্য ১৮৫ টাকা। তবে কক্সবাজার পর্যন্ত এই ভাড়া যথাক্রমে ১৮৫ ও ৩৪০ টাকা।
জানা যায়, গত বছরের ১১ নভেম্বর চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত ৮০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গত বছরের ১ ডিসেম্বর ঢাকা-কক্সাবাজার আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি পর্যটক এক্সপ্রেস নামের আরেকটি ট্রেন এ রুটে চালু করে রেল। কিন্তু ঢাকা-কক্সবাজার রুটের দুটি ট্রেনের প্রতিটিতে ১১৫টি করে আসন বরাদ্দ রাখা হয় চট্টগ্রাম স্টেশনের জন্য। ঢাকা থেকে পরপর দুটি ট্রেন চালু করলেও চট্টগ্রাম থেকে কোনো ট্রেন দেওয়া হয়নি।
মন্তব্য করুন