কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল দেখতে যেতে পাড়ি দিতে হবে ৩০ মিটারের বাঁশের সাঁকো। স্বাধীনতার পর থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ও জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের মাঝামাঝি সাপমারা খালের ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোতেই আটকে আছে ৫০ হাজার মানুষের স্বপ্ন। নির্বাচন আসলে প্রার্থীরাও স্বপ্ন দেখায় এই সাঁকো নিয়ে, এভাবে চার যুগ পেরিয়ে গেলেও সাঁকো আর সেতু হয় না। তাই এখন দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের টানেল দেখতে যেতে হবে এই সাঁকো পার হয়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুরোনো বাঁশে নির্মিত সাঁকোটিতে দুজনের বেশি উঠলেই দুলে ওঠে। সাঁকোর বাঁশগুলো ফেটে গেছে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা অনেক কষ্টে যাতায়াত করতে হচ্ছে বহু বছর ধরে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রায়পুর ও জুঁইদন্ডী দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম এই সাঁকোটি। বিভিন্ন সময় দুর্যোগ ও জোয়ারের পানির আঘাতে সাঁকোটির অবস্থা নাজুক। স্থানীয় লোকজন নিজ উদ্যোগে এটি মেরামত করলেও অধিক মানুষের যাতায়াত ও জোয়ারের পানির তোড়ে সাঁকোটি আবারও নড়বড়ে হয়ে ওঠে। ফলে এলাকার নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য সাঁকোটি পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এ সাঁকো দিয়ে রায়পুরের বহু শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য জুঁইদন্ডী জে কে এস উচ্চ বিদ্যালয় ও আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসায় যায়। তা ছাড়া দুই ইউনিয়নের লোকজন এই সাঁকো দিয়ে আনোয়ারা সদর ও চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করে।
সরেঙ্গা এলাকার বাসিন্দা জিয়াউল হক জিয়া বলেন, টানেলের কারণে চট্টগ্রামের চিত্র পাল্টালেও আমাদের এই সাঁকোর কোনো খবর আসেনি। তাই আমরা বলতে পারি টানেল দেখতে এই সাঁকো দিয়েই যাব আমরা।
আরও পড়ুন : বঙ্গবন্ধু টানেল পার হতে টোল দিতে হবে যত টাকা
অপর বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, অসুস্থ ব্যক্তি, নারী-শিশু ও বৃদ্ধরা এই সাঁকো দিয়ে পার হতে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে।
রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন শরিফ বলেন, দুই ইউনিয়নের অর্ধলক্ষ মানুষ একটি সেতুর অপেক্ষায় রয়েছে দীর্ঘদিন। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ব্রিজ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী তছলিমা জাহান বলেন, সাপমারা খালের ওপর ত্রিশ মিটার পাকা সেতুর জন্য নতুন করে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি মহোদয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সেতু নির্মাণে বরাদ্দের জন্য ডিও লেটারও দিয়েছে। বর্তমানে এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন এলেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করব।
মন্তব্য করুন