চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মুখোশধারী ডাকাত আতঙ্কে শিপইয়ার্ড কারখানার মালিকরা। প্রতিদিন এই মুখোশধারী ডাকাতরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে নৌপথে এসে ভারী অস্ত্র নিয়ে হানা দিয়ে লুট করছে শিপইয়ার্ড কারখানার মূল্যবান মালামাল। এক সপ্তাহ ব্যবধানে তিনটি শিপইয়ার্ড কারখানায় হানা দিয়েছে ডাকাতরা। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে শিপইয়ার্ড মালিকদের মাঝে।
এদিকে জাহাজভাঙা কারখানার সংগঠন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লাস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিএআরএম) নেতারা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
শিপইয়ার্ড কারখানা সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহে ব্যবধানে উপজেলার সাগর উপকূলে অবস্থিত বিভিন্ন শিপইয়ার্ডে নৌপথে সংঘবদ্ধ হয়ে ডাকাতের দল হানা দিয়েছে। শিপইয়ার্ড কারখানাগুলো হলো, সোনাইছড়ি ইউনিয়নের গামরিতল এলাকার সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত ক্রিস্টাল শিপার্স লিমিটেড, কদম রসূল এলাকার সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত কদম রসূল স্টিল, ভাটিয়ারী বিএম গেট এলাকার সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত সিমনী শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
ক্রিস্টাল শিপার্স লিমিটেডের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, গত ১১ জানুয়ারি গভীর রাতে নৌপথে সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাতের দল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শিপইয়ার্ডে আসে। ওদের ভারী অস্ত্র দেখে ইয়ার্ডের নৈশপ্রহরীরা প্রাণভয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। এতে শিপইয়ার্ড থেকে প্রায় তিন টন মূল্যবান তামা নিয়ে যায়। যার বর্তমান বাজারমূল্য ১৬ লাখ টাকা। ডাকাতরা মুখোশ পরা থাকায় কাউকে চিনতে পারিনি। ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাত করে সীতাকুণ্ড থানা একটি অভিযোগ দায়ের করি।
তিনি আরও বলেন, নৌপথে এসে শিপইয়ার্ড ডাকাতির ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি কিন্তু ইদানীং কোনো না কোনো ইয়ার্ডে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে ডাকাতরা হানা দিচ্ছেন, এটা খুবই দুঃখজনক। শিপইয়ার্ড কারখানার জন্য এটি অশনিসংকেত।
কদম রসূল স্টিলের ম্যানেজার সাইফুদ্দিন বলেন, ওরা মুখোশ পরে এবং ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসে। ডাকাতদের না চেনার কারণে মামলা করিনি।
অপরদিকে সিমনী শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জ সুবোধ রায় বলেন, আনসার ও নৈশ প্রহরীরা প্রতিরোধ করার কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায়। এখন তো প্রতি রাতেই ডাকাতরা হানা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লাস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিএআরএম) সভাপতি আবু তাহের বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সংগঠনের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
তিনি আরও বলেন, এভাবে নৌপথে আগে কখনো ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি।
বিষয়টি সম্পর্কে কুমিরা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের সাধ্যের মধ্যে আমরা চেষ্টা করছি। জনবল সংকট তারপরেও নৌপুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আবু সাঈদ বলেন, শিপইয়ার্ডে ডাকাতির বিষয়ে দুটি অভিযোগ পেয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং নৌ পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন