চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসময় কয়েকজন সিনিয়র নার্স ও স্টোর রুমের দায়িত্বশীলদের জিজ্ঞাসাবাদে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি বলে জনিয়েছেন দুদকের কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হকের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় সরকারি ওষুধ চুরিতে জড়িত সাতজনকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করেছে দুদক টিম। এর আগে ২০২২ সালের মার্চে দুদকে অভিযান চালিয়ে চমেক হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন দামি ব্রান্ডের ওষুধ সরবরাহে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছিল দুদক। একই বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্টোর রুম থেকে ওষুধ পাচারের সময় চমেকের দুই স্টাফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে দুদকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার হটলাইনে অভিযোগ পেয়ে ছদ্মবেশে অভিযানে নামে দুদক টিম। দুদকের ছদ্মবেশে চালানো অভিযানে ধরা পরে নানা অসঙ্গতি। হাসপাতালের ইমারজেন্সি কেয়ার ইউনিটে অভিযানে দেখা যায়, রোগীকে ওষুধ না দিলেও তা লেখা রয়েছে নার্সের কাছে থাকা রেজিস্ট্রার খাতায়। এমনকি শয্যায় রোগী ভর্তি না থাকা সত্ত্বেও রোগীর নাম দেখিয়ে ওষুধ সরিয়ে নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। একই রকম অনিয়ম ধরা পড়ে হাসপাতালে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডেও। সবমিলিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র ও রেজিস্ট্রার খাতার সাথে ওষুধ সরবরাহের ব্যাপক গরমিল পাওয়া গেছে। পরে এ নিয়ে চমেকের সিনিয়র নার্সকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা সদুত্তর দিতে পারেন নি।
অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, আমরা হট লাইনে অভিযোগ পাওয়ার পর হাসপাতালে ছদ্মবেশে অভিযান চালাই। এতে ওষুধ নিয়ে নয়ছয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব ওষধুদের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে নার্সরাই। আমাদের অভিযানের সময় হাসপাতালের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও সঙ্গে ছিলেন। তিনি দেখেছেন ওষুধ নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে হাসপাতালে। আমরা বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালককে অভিহিত করেছি। তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
চমেক হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান জানান, দুদকের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া হাসপাতালের অনিয়ম ঠেকাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
মন্তব্য করুন