চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া শিশু আরাধ্য বিশ্বাস ও তার মামাতো ভাই দুর্জয় কুমার বিশ্বাস ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। দুজনেরই হাত ও পায়ে অপারেশন হয়েছে। আরাধ্য বিশ্বাসের চিকিৎসা চলছে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে। আর দুর্জয় চিকিৎসাধীন আছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
গত ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় চট্টগ্রামগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে কক্সবাজারগামী মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- আরাধ্য বিশ্বাসের বাবা দিলীপ বিশ্বাস (৪৩) ও মা সাধনা মণ্ডল (৩৭), মামা আশীষ মণ্ডল (৫০) ও দিলীপ বিশ্বাসের সহকর্মী রফিকুল ইসলাম (৪৮), তার স্ত্রী লুৎফুন নাহার (৩৭), তিন মেয়ে তাসনিয়া ইসলাম প্রেমা, লিয়ানা, আনিশা; তাদের ফুফাতো বোন তানিফা ইয়াসমিন, দিলীপ বিশ্বাসের আরেক সহকর্মী মোক্তার আহমেদ (৫২) এবং মাইক্রোবাসের চালক ইউছুফ আলী।
এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল আরাধ্যা বিশ্বাস (৬)। পরবর্তীতে ৪ এপ্রিল চিকিৎসকদের পরামর্শে আরাধ্যাকে ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অন্যদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে দুর্জয় কুমার বিশ্বাস (১৮)। দুর্ঘটনায় সে হাত, পা ও মাথায় গুরুতর আঘাত পায়।
দুর্জয়ের সঙ্গে হাসপাতালে থাকা মামা অপূর্ব কুমার ঘোষ কালবেলাকে বলেন, দুর্জয়ের অবস্থা উন্নতির দিকে আছে। হাত ও পায়ে অপারেশন হয়েছে। মুখে তরল খাবার দেওয়া হচ্ছে। তবে মাঝেমধ্যে উল্টাপাল্টা কথা বলে। আবার পরে ঠিক হয়ে যায়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, শুক্রবার দুর্জয়ের অপারেশন হয়েছে। সে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। হাসপাতালে আরও দুই থেকে তিন সপ্তাহ থাকতে হবে।
এদিকে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু আরাধ্য বিশ্বাসও ধীরে ধীরে সেরে উঠছে। তারও হাত-পায়ে অপারেশন হয়েছে। রোববার গ্রামের বাড়িতে তার মা-বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু সে এখনো মা-বাবার মৃত্যুর খবর জানে না।
ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে তার সঙ্গে থাকা চাচা সম্পর্কের নিখিল কালবেলাকে বলেন, আরাধ্যের দুই পা ও বাম হাতে অপারেশন হয়েছে। হুইল চেয়ারে করে কেবিনের বাইরে ঘুরানো হয়েছে। সে মা-বাবার কথা জানতে চায়। তাদের কাছে যেতে চায়। আমরা তাকে বলেছি তারাও তোমার মতো অসুস্থ। সুস্থ হলে তাদের কাছে নিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, তাকে আরও কিছুদিন স্কয়ার হাসপাতালে রাখা হবে। চিকিৎসা পরিপূর্ণ শেষ করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।
মন্তব্য করুন