দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান এক ও অভিন্ন জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মুসলমানদের বিভিন্ন দলে ভাগ করার জন্য চক্রান্ত চলছে। আমাদের এ ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। যে কোনো মূল্যে আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে নগরীর চকবাজারের প্যারেড মাঠে আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের সমাপনী দিনে তিনি এসব কথা বলেন।
আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, বিগত ১৬ বছর ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে যারা বিক্রি ও নয়ছয় করেছে, হাইকোর্টের বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব আমি। জঞ্জাল একদিনে পরিষ্কার করতে পারব না। তবে পরিষ্কার করা শুরু করেছি।
তিনি বলেন, আলেম যারা, যাদের কোরআনের ওপর পাণ্ডিত্য আছে তারা দেশ চালালে আমাদের এ দেশ, ব্যক্তি, পরিবার সোনার সমাজে পরিণত হবে। আমরা যদি সরকার পরিচালনায় আলেমদের সম্পৃক্ত করতে পারি তাহলে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, লুটের মানসিকতা ও অব্যবস্থাপনা বিদায় নেবে। ফেসবুকে, টুইটারে ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে গুতাগুতি না করে পরস্পরকে সম্মান করতে শিখি। দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করি। যাদের মন ছোট তাদের মাধ্যমে বড় কাজ হয় না। সবাইকে নিয়ে কাজ করার মানসিকতা আমাদের গ্রহণ করতে হবে। আমরা যদি কাছাকাছি আসতে পারি, এক অপরের ঘরে যেতে পারি, বসতে পারি তাহলে এটাও সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমি আশাবাদী। আমরা এ দেশে কোরআনের আদর্শে একটি সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা দেখে যাব।
বাংলাদেশের মুসলমানদের এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, পৃথিবীতে ২০০ কোটি মুসলমান, ৫৭টি মুসলমানের দেশ আছে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারতাম ইতিহাস নতুনভাবে লেখা হতো। বাংলাদেশে ১৮ কোটি মুসলমান। আর ভেদাভেদ বা সংঘাত নয়, মতবিরোধ থাকবে। মতবিরোধ নিয়েই আমরা ঐক্যবদ্ধ হব। বাংলাদেশের বিভিন্ন ধারা আলেম-ওলামারা যদি এক হতে পারে আগামীকাল যে সূর্য উঠবে সেটা হবে নতুন।
আগামী নির্বাচন ঐতিহাসিক হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সাহেব বলেছেন আগামীতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। একটি ঐতিহাসিক নির্বাচন হবে আগামীতে। দিনের ভোট রাতে হবে না। দিনের ভোট দিনে হবে। এ দেশের জনগণ যাকে ভালো মনে করে তাকে ভোট দেবে। ভোট নিয়ে কোনো কারচুপি হবে না। কেউ ব্যালট বাক্স চুরি করে নিয়ে গেলে মুহূর্তের মধ্যেই সে সেন্টার আমরা বন্ধ করে দেব।
২০২৬ সালে সমুদ্রপথে হজ পালন করতে হাজিদের পাঠানোর চেষ্টা করবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৬ বছরের জঞ্জাল ছয় মাসে দূর করা যায় না। আমি হাজিদের জন্য সৌদি আরবের বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার থেকে ১ লাখ ৬৭ হাজারে নামিয়ে এনেছি। ওখানে ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসেছি। তারা সাগর দিয়ে জাহাজে হাজি পাঠানোর ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। কিন্তু আমাদের জাহাজ নেই। ২০২৬ সালে জাহাজে করে হাজি পাঠানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাব। আমার মন্ত্রণালয়ের কেউ যদি ঘুষ খায়, আমি তাকে সাসপেন্ড করে দেব।
ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদ, চট্টগ্রামের উদ্যোগে পাঁচ দিনব্যাপী এ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সমাপনী দিনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি চিন্তাবিদ ড. মিজানুর রহমান আজহারি। প্রধান অতিথি ছিলেন আ ফ ম খালিদ হোসেন।
মন্তব্য করুন