চট্টগ্রাম নগরীর দখল হয়ে যাওয়া সব খাল উদ্ধারের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। পাশাপাশি দখলদারদের আইনের আওতায় আনারও ঘোষণা দেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) নগরীর আকবরশাহ এলাকার লেকসিটি আবাসিক এলাকার কালিরছড়া খাল পরিদর্শন শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন।
মেয়র বলেন, একসময় চট্টগ্রামে প্রায় ৫৭টি খাল ছিল; কিন্তু আজ এ সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ৩৬-এ। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সিডিএর উদ্যোগে যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে ৫৭টি খাল থেকে কাজের জন্য ৩৬টি খাল চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনো ২১টি খাল অবহেলিত রয়ে গেছে। আমরা এগুলো উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।
খাল দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আমরা দৃঢ় সংকল্প করেছি যে, দখলদারদের আইনের আওতায় এনে খালগুলোকে পুনরুদ্ধার করব। খাল থাকবে খালের জায়গায়, নালা থাকবে নালার জায়গায়। পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ, আমরা চট্টগ্রামকে বাসযোগ্য শহরে পরিণত করব।
চসিকের কাউন্সিলরদের ভূমিদস্যু ও ডাকাতের সর্দার আখ্যা দিয়ে মেয়র বলেন, কালিরছড়া খালটি চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকায় অবস্থিত। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে পাহাড় কাটার কারণে এই খালের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এখানে পাহাড় যারা কেটেছে, তারা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পোষ্য ছিল। এক-একজন কাউন্সিলর ছিল ভূমিদস্যু, এক-একজন ডাকাতের সর্দার ছিল। এই যে জসিম (স্থানীয় কাউন্সিলর) সে একজন ভূমিদস্যু। পাহাড় কাটার জন্য সে বিখ্যাত ছিল; কিন্তু তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, তাকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায়ও আনতে পারেনি।
পাহাড় কাটার পেছনেও অনির্বাচিত শক্তি কাজ করেছে দাবি করে মেয়র বলেন, রাষ্ট্র এ সমস্যার জন্য দায়ী। ভোটের অধিকার হরণ করে অপরাধীদের কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই অপরাধীদের মাধ্যমে দখল, লুটপাট ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে শহরটি। গত ১৬ বছর ধরে চলা এ অব্যবস্থাপনার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না যদি আমরা তাদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ রেখে যেতে ব্যর্থ হই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, মাহমুদ শাফকাত আমিন, উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন