চট্টগ্রামে শাহ আমানত বিমানবন্দরের কর্মচারী উসমান সিকদার খুনের ঘটনায় বের হচ্ছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এর পেছনে নিহতের দুই সহকর্মীর নাম উঠে এসেছে। পুলিশের অভ্যন্তরীণ একটি সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেন চারজন। ঘটনার আগে হুন্ডির ৩০ লাখ রিয়াল নিয়ে ওসমানের সঙ্গে তার প্রতিপক্ষের বিরোধ সৃষ্টি হয়। যে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে তারা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেননি।
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, নিহত ওসমান সিকদার বিমানবন্দরকেন্দ্রিক চোরাচালান চক্রে জড়িত ছিলেন। চোরাচালানে জড়িত থাকার আলামত পেয়ে উসমানসহ আরও কয়েকজনকে শাহ আমানত থেকে সরিয়ে নিতে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কাছে গত দুই মাসে একাধিক চিঠি দেয় শাহ আমানত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বরাবরই ঊর্ধ্বতনদের ম্যানেজ করে তারা থেকে যান বহাল তবিয়তে। সম্প্রতি উসমানকে শাহ আমানত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক ভবনে বদলি করা হলেও তিনি অকারণে ঘোরাফেরা করতে থাকেন টার্মিনাল ভবনে। যদিও সেখানে তার কোনো দায়িত্ব ছিল না।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উসমান সিকদারসহ সিভিল অ্যাভিয়েশনের বেশ কয়েকজন কর্মচারী বৈদেশিক মুদ্রা চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি ওসমানের সঙ্গে ফটিকছড়ির বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গে ৩০ লাখ রিয়াল নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। কথা ছিল উসমান রিয়ালগুলো নিয়ে ইমিগ্রেশন পার হওয়া যাত্রীদের হাতে পৌঁছে দেবেন। কিন্তু উসমান রিয়ালগুলো সেই যাত্রীদের দেননি। তিনি প্রচার করেন রিয়ালগুলো গোয়েন্দা পুলিশ ছিনিয়ে নিয়েছে।
পরে উসমানের কাছ থেকে রিয়ালগুলো ফেরত পেতে চাপ দিতে থাকে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে পিটিয়ে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে প্রতিপক্ষ। এরই ধারবাহিকতায় শাহ আমানত বিমানবন্দর সংলগ্ন লিংকরোড এলাকার একটি স্থানে নিয়ে তাকে পেটানো হয়। মারধরে অংশ নেয় চারজন। এই মারধরের একপর্যায়েই মারা যান উসমান সিকদার।
বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বলেন, ঘটনাটি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের পরিচালক সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে অবহিত করি। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাদের দুই কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনাস্থলে তাদের একজনকে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা গেছে। আরেকজন লেনদেনের বিষয়টি আগে থেকে জানতেন। তবে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত এটির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য নেওয়া যায় কিনা এজন্য আটক করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন