জার্মানিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ১১ কৃতী শিক্ষার্থীকে এককালীন স্কলারশিপ দিয়েছে ট্যাপট্যাপ সেন্ড এবং ডিগ্রিওলা ডটকম। জার্মানিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংগঠন বাহসিগ-এর উদ্যোগে এই স্কলারশিপ প্রদান অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) জার্মানির রাজধানী বার্লিনে আয়োজিত স্কলারশিপ প্রদান ও গেট-টুগেদার অনুষ্ঠানে প্রায় ১৫০ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
বার্লিনের স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জার্মানিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) কাজী মুহম্মদ জাবেদ ইকবাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন, জার্মানির রাষ্ট্রায়ত্ত রেল সংস্থা ডয়চেবানের ডিজিটালাইজেশন এবং অটোমেশন বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ড. মাসুদ কবীর, কেমনিটজ টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক জুলকার নাইন এবং একই বিভাগের গবেষক উম্মে উবায়দা শেগুপ্তা।
জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত ১১ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে এককালীন ৩০০ ইউরো বা প্রায় ৪০ হাজার টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হয়। ভালো ফলাফলের পাশাপাশি যাদের মধ্যে লিডারশিপ দক্ষতা এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে ভবিষ্যতে কাজ করার আগ্রহ রয়েছে তেমন শিক্ষার্থীদের এই স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। এই আয়োজনের মূল স্পন্সর ছিল বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর জনপ্রিয় অ্যাপ ট্যাপট্যাপ সেন্ড (Taptap Send) এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও অভিবাসনবিষয়ক তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান Degreeola.com।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জাবেদ ইকবাল বলেন, জার্মানিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অপার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারও এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে ভিসার জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আমরা এ বিষয়টি নিয়েও ওয়াকিবহাল। জার্মান সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আশা করি শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
বিশেষ অতিথি ড. মাসুদ কবীর বলেন, স্কলারশিপের টাকার পরিমাণের চেয়েও সম্মানটা হচ্ছে আসল। যারা আজ স্কলারশিপ পেলেন তাদের জন্য এ অর্জনটি ভবিষ্যতে আরও ভালো ফলাফলসহ দেশের উন্নয়নে কাজ করার উৎসাহ জোগাবে।
শিক্ষক জুলকার নাইন বলেন, শিক্ষার্থী হিসেবে জার্মানি এসে অনেকেই পড়াশোনা ভালোভাবে শেষ করেন না। এতে করে তাদের ক্যারিয়ার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। পড়াশোনার দিকে নজর দিলে জার্মানিতে সুন্দর একটি ক্যারিয়ার হতে পারে।
গবেষক উম্মে উবায়দা শেগুপ্তা বলেন, অধ্যবসায়ী হলে, সত্যিকারের মোটিভেটেড হলে, পরিশ্রম করলে জার্মানিতে সুযোগ সুবিধার কোনো শেষ নেই। দরকার দক্ষতার সঙ্গে পরিশ্রম। তাহলে জার্মানিতে ভালো ক্যারিয়ার গঠন করা সম্ভব।
এ বছর স্কলারশিপপ্রাপ্তরা হলেন, রাইনভাল অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটির বায়োইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাজিদুল ইসলাম, বার্লিনের ফ্রি ইউনিভার্সিটির রসায়ন বিভাগের মো. লুৎফুল বারী, প্যাডারবর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমস ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের রাকিবুল ইসলাম, ডুইসবুর্গ-এসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লজিস্টিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সানজিদা আক্তার মৌলি, বার্লিন ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের খান মোহাম্মদ শৈশব আজাদ, টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ডর্টমুন্ডের ড্যাটা সায়েন্স বিভাগের নন্দিতা চক্রবর্ত্তী, নিদাররাইন ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের ম্যানেজমেন্ট অব টেক্সটাইল ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের মো. জোবায়ের হোসেন, টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ডার্মস্টাডের এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মোল্লা মো. তমাল হোসেন, ইউনিভার্সিটি অব পটসডামের কগনিটিভ সিস্টেম বিভাগের মো. দেলোয়ার হোসেন, ইউনিভার্সিটি অব ব্রেমেনের অ্যাস্ট্রোফিজিক্স অ্যান্ড স্পেস সায়েন্স বিভাগের জুবাইদা করিম যুঁথি এবং ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস ফর ইন্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইকোনোমিক্সের আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন অর্থনীতি বিভাগের খাদিজা আক্তার।
অন্যদিকে ট্যাপট্যাপ সেন্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত EGALTUBE প্রোমোকোডটি ব্যবহার করে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রথমবার ২০ ইউরো বা সমপরিমাণ বোনাস পাওয়া যাবে।
মন্তব্য করুন