গণঅভ্যুত্থানে নিহত তানভীর ছিদ্দিকীর চাচাত ভাই মহেশখালী উপজেলা যুবদলের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়াকে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে মানববন্ধন করেছে পরিবারের সদস্যরা। এ সময় জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা, স্বজন ও ছাত্র-জনতা।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে মহেশখালীর কালারমার ছড়া ইউনিয়নের মোহাম্মদ শাহ ঘোনা গ্রামের বসতঘর থেকে উপজেলা যুবদলের সাবেক ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে নিহত তানভীর সিদ্দিকীর ভাই জিয়াউর রহমান জিয়াকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে তানভীরের পরিবার।
মানববন্ধনে তানভীরের বাবা বাদশা মিয়া বলেন, স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। তানভীর সিদ্দিকী হত্যা মামলার একজন আসামিকেও প্রশাসন গ্রেপ্তার করেনি। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, তানভীর, আবু সাঈদ, ওয়াসিমসহ প্রায় দেড় হাজার নিহতদের আত্মদান কি তবে ব্যর্থ হবে? আমরা এটা হতে দিতে পারি না। প্রয়োজনে দেহের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও এই স্বাধীনতা আমরা রক্ষা করব। অবিলম্বে জুলাইয়ের হত্যাকারী ও ষড়যন্ত্রকারীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। জিয়ার বিরুদ্ধে করা সকল ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা-বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার করে তাকে মুক্তি দিতে হবে।
তানভীরের ফুফু খায়রুন্নেছা রুবি বলেন, যুবদল নেতা জিয়াকে গ্রেপ্তারের পেছনে ইন্ধন দিয়েছে তানভীর হত্যা মামলার অন্যতম আসামি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি উসমান গণি। সে জাতীয়তাবাদী নেতাকর্মী ও জুলাই অভ্যুত্থানের বিপ্লবীদের নিধনের মিশনে নেমেছে।
তানভীর সিদ্দিকীর চাচা কামরুল হাসান রুবেল বলেন, ৫ ও ৬ আগস্ট বা তারও পরবর্তী সময়ে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরে মহেশখালী থানায় হামলা কিংবা পুলিশের অস্ত্র লুটের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে কক্সবাজার মডেল থানা, ঈদগাঁও থানা এবং চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানায় উত্তেজিত জনতার হামলার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের সেই উত্তাল সময়ে জিয়া মহেশখালীতে অবস্থান করছিল। এমতাবস্থায় তার কাছে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের তথাকথিত দাবি কীভাবে যুক্তিসঙ্গত হতে পারে?
তানভীরের দাদা মো. শফি বলেন, গত মাসে তানভীরের পরিবারকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়। যা সারা দেশে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন তানভীরের চাচাত ভাই জিয়া। তার তত্ত্বাবধানে হস্তান্তর অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়। তখন সেখানে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দ, পুলিশ ও স্থানীয় নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে কক্সবাজার জেলার ডিসি তানভীরের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের খোঁজখবর নিতে গিয়েছিলেন। সবকিছুতেই ছায়াসঙ্গী ছিল জিয়াউর রহমান জিয়া।
নিহত তানভীর সিদ্দিকীর চাচাত ভাই দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, তানভীরের চাচা মহেশখালী উপজেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সাবেক ছাত্রদল নেতা রবিউল হাসান কর্নেল, আরকান শাহরিয়ার, মো. কাজল, শ্রমিক দল নেতা সরওয়ার আলম, চট্টগ্রাম যুব ক্যাবের সভাপতি মো. আবু হানিফ, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির নেতা নিয়াজ উদ্দিন দিনার, সৈয়দ সোহরাব সাহল, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিমেল, হাজেরা তজু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী আফসানসহ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও সাধারণ জনগণ।
মন্তব্য করুন