কেবল হাজার-হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প করে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসণ সম্ভব নয়। প্রকল্পের পাশাপাশি জনসচেতনতা, পরিবেশ রক্ষা, পরিকল্পিত নগরায়ন এবং সেবা সংস্থাগুলোর মাঝে সমন্বয়ও জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিমের সঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় নিয়ে আলোচনায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, সিডিএ, ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন্দরসহ সবগুলো সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কেবল হাজার-হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প করে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসণ সম্ভব নয় বরং প্রকল্পের পাশাপাশি জনসচেতনতা, পরিবেশ রক্ষা ও পরিকল্পিত নগরায়নও জরুরি।
খাল-নদী রক্ষায় আইনের প্রয়োগ প্রয়োজন মন্তব্য করে মেয়র বলেন, আমি বাকলিয়ায় কৃষিখালে গিয়ে দেখলাম খালটা যেন ডাম্পিং স্টেশন হয়ে গেছে। অথচ বাকলিয়া এলাকার জলাবদ্ধতার পানি নিরসণে খালটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চাক্তাই খালেরও অনেক স্থানে ৭-৮ তলা বিল্ডিং হয়ে গেছে। অন্যান্য খালেও দখল ও বর্জ্য নিয়ে একই সমস্যা যা শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে, কর্ণফুলীকেও হত্যা করছে। এজন্য আমার মনে হয় প্রয়োজনে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। আমি হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়াব না তবে, যারা নিয়ম মানছে না, আইনের মধ্যে চলছে না অথবা সুন্দর শহর গড়ার আমাদের যে প্রত্যয় সেটার বিরুদ্ধে কাজ করছে, যারা নালা-খাল ময়লা-দখল করে তাদের জরিমানা করব।
জলাবদ্ধতা নিরসণে ওয়াসাকেও ভূমিকা রাখতে হবে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, আমার বিকল্প কিছু পরিকল্পনা আছে জলাবদ্ধতার জন্য। এই যে বর্ষাকালে অতিরিক্ত যে পানিটা আসে সেটা যদি আমরা সংরক্ষণ করতে পারি তাহলে অতিরিক্ত পানি যেগুলো নালাতে চলে যাচ্ছে সেগুলো সংরক্ষণ হলে জলাবদ্ধতা হ্রাস পাবে এবং মাটির নিচের পানির স্তরও রক্ষা পাবে। সিডিএরও উচিত বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জায়গা ছেড়ে বাড়ি করা হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করা। কারণ, পানি মাটির নিচে না যেতে পারায় কিন্তু ভূমি ধীরে ধীরে নিচে নেমে যাচ্ছে এবং ভূমিকম্প ও ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়ছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম এবং সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ এ এম হাবিবুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মন্তব্য করুন