বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আপনাদের মনে আছে, ঢাকাতে গুলি করে বিএনপির সমাবেশ পণ্ড করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার সেই আশা তারেক রহমানের নেতৃত্বের গুণের কারণে সফল হয়নি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে জগণের শেষ ধাক্কায় শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর কাজীর দেউরী আলমাস সিনেমা মোড়ে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত র্যালিপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এখন অনেক গল্প শুনছি, শেখ হাসিনার পতনের গল্পের শেষ নেই। প্রত্যেকদিন নতুন নতুন গল্প শুনছি। ওরা না কি এটা করেছে, সেটা করেছে। ১৫ বছর যখন আমরা রাস্তায় আন্দোলন করেছি, জীবন দিয়েছি, গুম-হত্যার শিকার হয়েছি, জেলে গিয়েছি বারবার, তখন তো তোমাদের এসব গল্প দেখিনি।
আমীর খসরু বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার সহযোগিতায় বাংলাদেশের মানুষ জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেছিলেন। বাংলাদেশে এক নতুন ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে ৭ নভেম্বর। শেখ মুজিবুর রহমান, বাকশাল, আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। শহীদ জিয়াকে মুক্ত করার মাধ্যমে এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল। সেই বাংলাদেশ হলো বহুদলীয় গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, স্বাধীনতার বাংলাদেশের, আইনের শাসনের বাংলাদেশ, জীবনের নিরাপত্তার বাংলাদেশ, স্বাধীন-সার্বভৌম মাথা উঁচু করার বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ১/১১ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ যখন কিছু লোকের মাধ্যমে মানুষের সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে আবারও একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশের ভেতরে এবং দেশের বাইরে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে, বিএনপিকে সেদিন তারা পরাজিত করেছিল। পরে ওই স্বৈরাচারকে আবারও ক্ষমতায় বসিয়েছে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে দিয়ে, বিএনপির সাত লাখের অধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নিপীড়ন, নির্যাতন, খুন, গুম, হত্যা, জেলহত্যা, পুলিশের হেফাজতে হত্যা, এর মাধ্যমে সেদিন বাংলাদেশে আবারো একটি নিরাপত্তাহীন জনগণের জন্য পরাধীন জাতি সৃষ্টি করেছিল। সেখানে আবারো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রুখে দাঁড়িয়েছিল।
আমীর খসরু বলেন, জনপ্রতিনিধিত্বহীন কোনো সরকার জনগণের কথা বুঝবে না, জনগণের কষ্ট বুঝবে না। কারণ বুঝতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে, জনগণের দুঃখ-দুর্দশা বুঝতে হবে। বিদ্যুতের বিল দিতে পারছে না, সেটা বুঝতে হবে, দুবেলা খেতে পারছে না সেটা বুঝতে হবে।
আমীর খসরু মাহমুদ আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কবে ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করবে সেই বয়ান নেই। বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেয়ে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হবে সেই বয়ান নেই। বয়ান হচ্ছে, সংস্কারের বয়ান। আরে সংস্কার কি বিএনপির আগে আপনারা দিয়েছেন। ৬ বছর আগে বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন। কারণ, আমরা জনগণের কথা বুঝেছি বলে আমরা দিয়েছি। এক বছর আগে তারেক রহমানের নেতৃত্ব আমরা সবাই একটি নতুন সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি। ওই সংস্কারে সবকিছু আছে। কিছু বাকি নেই। আপনারা যা বলেছেন, তাও আছে, তার বাইরে আছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস. এম ফজলুল হক।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, হারুনুর রশিদ, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য শামসুল আলম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য উদয় কুসুম বড়ুয়া, উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম।
মন্তব্য করুন