চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কক্ষ দখল করে ভবন মালিককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে উত্তর জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও জোরারগঞ্জ থানা যুবদলের আহ্বায়ক মো. সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার ও জোরারগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন যুবদল নেতা মো. সিরাজুল ইসলাম। ভুক্তভোগী আবুল কালাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের বাবা হয়েও নিজ দলের নেতাকর্মীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এই ঘটনায় জোরারগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী পরিবার।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যম সোনাপাহাড় এলাকায় আবুল কালামের ভবনের একটি ফ্ল্যাটে বিএসআরএমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মায়ের দোয়া কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. আবদুর রাজ্জাককে ভাড়া দেয়। ওই ফ্ল্যাটের একটি কক্ষ জোর করে দখলে নেন সিরাজুল ইসলাম। এতে অপরিচিত লোকজনের আনাগোনায় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় পড়েন ভবনের বাসিন্দারা। বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী নুরুল আমিনকে মারধর করে ভবনে প্রবেশ করে সিরাজের অনুসারী পিচ্চি সাইফুল, এমরান, মো. ইব্রাহিম, আবদুল হাই, সুরুজ মিয়াসহ অজ্ঞাত আরও ১৫/২০ জন।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) ভবন মালিক আবুল কালাম কালবেলাকে বলেন, মারধর এবং গালাগালের কারণ জানতে চাইলে অপরিচিত কয়েকজন আমাকেও মারধর করে। পরে আমার ঘরের একটি কক্ষে আটকে রেখে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় এবং এ বিষয়ে থানায় মামলা করলে আমাকে ও পরিবারের সদস্যদের গুম করে ফেলার হুমকি দেয়। বিষয়টি আমি এলাকার ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করলে তারা আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে আমি চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার ও জোরারগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
যোগাযোগ করা হলে আবুল কালাম সওদাগর ভবনের ভাড়াটিয়া বিএসআরএমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মায়ের দোয়া কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী মো. আবদুর রাজ্জাক কালবেলাকে বলেন, আমি ভয় পেয়ে বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের ইউপি সদস্য মো. শাহিন মেম্বারকে একটি কক্ষ ভাড়া দেই। গত ৫ আগস্টের পর থেকে শাহিন মেম্বার ওই কক্ষে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। তখন আমি স্থানীয় যুবদল নেতা সিরাজুল ইসলামকে ওই কক্ষটি ভাড়া দিয়েছি। আমি এখানকার স্থানীয় না। অন্য এলাকা থেকে এসে এখানে ব্যবসা করছি।
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও জোরারগঞ্জ থানা যুবদলের আহ্বায়ক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি অনেক আগে রুমটি ছেড়ে দিয়েছি। এটি এখন মিমাংসিত বিষয়।
জোরারগঞ্জ থানার ওসি এটিএম শিফাতুল মাজদার বলেন, আবুল কালামের ভবন সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন