দেশব্যাপী চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগসহ সব রাজনৈতিক সংগঠনকে বয়কটের ডাক দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এতে অংশ নিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরাও।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) আনুমানিক রাত ৯টায় চট্টগ্রাম শহরের চাঁদগাও এলাকায় চুয়েট শিক্ষার্থীবাহী সাঙ্গুবাসে হামলা হয়। জানা যায়, এ হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাচের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগসহ সব রাজনৈতিক সংগঠনকে বয়কটের আহ্বান জানাতে শুরু করেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে জানান, যে সংগঠনের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেদের সহপাঠীদের ওপরই হামলা চালাতে পারে, এমন সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে থাকতে পারে না। এতে আমাদের শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। এমন সংগঠন আমরা চাই না।
এ ব্যাপারে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু রায়হান আল বিরুনী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, চলমান কোটা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে, চুয়েটে আমরা অত্র ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি ও সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বয়কট করছি।
তিনি বলেন, যারা এই বয়কট মানবে না অথবা আন্দোলনের বিরোধী কোনো পদক্ষেপ নেবে, তাদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অত্র ক্যাম্পাসে সর্বস্থানে সম্পূর্ণরূপে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।
পুরোকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাফুজুর রহমান মোহাব্বত বলেন, সারা দেশে আজকের আন্দোলনে ছাত্রলীগ ও পুলিশের যৌথ এবং ন্যক্কারজনক হামলায় বেশ কিছু আন্দোলনকারী নিহত হন এবং চুয়েটিয়ানসহ অনেকেই আহত হন। এ ছাড়া রাতে চুয়েট বাসে ছাত্রলীগের হামলা হয় ও আমার বোনদের লাঞ্ছিত করা হয়। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি চুয়েটে সব ছাত্র রাজনীতি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এখন থেকে নিষিদ্ধ থাকবে। কোটা আন্দোলনের যৌক্তিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করব না।
উল্লেখ্য, গত ৫ মে সরকারি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন উচ্চ আদালত। ফলে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ মোট ৫৬ শতাংশ কোটা বহাল থাকছে। বিষয়টিকে বৈষম্য আখ্যা দিয়ে দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এরই প্রতিবাদে দেশজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগসহ সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি বয়কটের পোস্ট দিতে দেখা যায়।
মন্তব্য করুন