রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সাদেক এগ্রোর অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ অভিযানের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে কালবেলার লিড মোজো রিপোর্টার আকরাম হোসাইনের ওপর হামলা করেছে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজারসহ কয়েকজন।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সকাল থেকেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে সাদেক এগ্রোতে। সে সময় সাদেক এগ্রোর বাহিনীরাও ছিল। এ সময় কালবেলার লিড মোজো রিপোর্টার আকরাম হোসাইন লাইভ করতে গেলে তেড়ে আসে সাদেক এগ্রোর বাহিনী।
আকরাম হোসাইন বলেন, মোহাম্মদপুরে সাদেক এগ্রোতে চলা ডিএনসিসির উচ্ছেদ অভিযানের সংবাদ প্রকাশ করতে গেলে সাদেক এগ্রোর ম্যানেজার এবং ক্যামেরাম্যানসহ তার বাহিনীর লোকজন আমার ওপর হামলা চালাতে আসে। আমার ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নিতে চায়। এ সময় উপস্থিত অন্যান্য গণমাধ্যমকর্মীরা এগিয়ে আসলে পিছু হটে সাদেক এগ্রো বাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শী ইত্তেফাকের রিপোর্টার জুবায়ের জানান, আমরা সবাই উচ্ছেদ অভিযান কাভার করছিলাম। হঠাৎ দেখি দৈনিক কালবেলার রিপোর্টার আকরাম ভাইয়ের মোবাইল ফোন এবং বুম নিয়ে টানাহেঁচড়া করে তার কাজে বাধা দেয়। এরপর আমরা এগিয়ে গেলে পালিয়ে যায় তারা।
মর্নিং টাইমসের রিপোর্টার শামিম আহমেদ জানান, শুরু থেকে সাদেক এগ্রোর কয়েকজন কালবেলার রিপোর্টারের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। সাদেক এগ্রোর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সময় কালবেলার রিপোর্টার আকরাম হোসেন লাইভে ছিল। তখন সাদেক এগ্রোর ম্যানেজার এবং কয়েকজন এসে ধাক্কা মেরে মোবাইল ফেলে দেয়। তখন আমরা কয়েক সাংবাদিক এগিয়ে গেলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ‘গরু মাফিয়া’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক কালবেলা। এ সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বেরিয়ে আসে সাদেক এগ্রোর মাফিয়াকাণ্ড।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রভাবশালীদের সঙ্গে ওঠাবসা তার। চোখধাঁধানো বিজ্ঞাপন আর নানা চমকের কারণে বারবার আলোচনায় আসে তার খামার। সেখানে নিজেই ক্রেতাদের হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানান। দেখেশুনে মনে হয় এই ‘সাদেক এগ্রো’ ঘিরেই যেন পরিচালিত হয় তার সার্বিক কার্যক্রম। কিন্তু এই খামারের আড়ালে দিনে দিনে উত্থান ঘটেছে এক গরু মাফিয়ার, যার নাম শাহ ইমরান হোসেন।
দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে রাজধানী পর্যন্ত বিস্তার করেছেন গরু চোরাচালানের সিন্ডিকেট। ভারত, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চোরাইপথে নানা জাতের গরু আনা হয়। সে জন্য স্তরে স্তরে রাখা হয় দালাল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে তোলা হয়েছে গরু রাখার গোপন ডেরা। ঢাকার বছিলায় খাল দখল করে গড়ে তুলেছেন এগ্রো ফার্ম। প্রয়োজনে ব্যবহার করেন তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, আমলা এবং ব্যবসায়ীদের।
এ খাতের অনিয়ম দেখার দায়িত্বে থাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরও তার হাতের মুঠোয়। কথামতো না চললে অন্য খামারিদের বিরুদ্ধে যখন তখন মামলা ঠুকে দেন। দাপট দেখিয়ে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদও দখলে নিয়েছেন মোহাম্মাদ ইমরান হোসাইন। কালবেলার দীর্ঘ অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
মন্তব্য করুন