স্থায়ী পুনর্বাসন ছাড়া বংশালের মিরনজিল্লা পল্লি থেকে উচ্ছেদ বন্ধ করাসহ ৮ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে স্বারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সংহতি সমাবেশ শেষে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ মিরনজিল্লা হরিজন কলোনি থেকে স্থায়ী পুনর্বাসন না করেই ৮০টি পরিবারকে উচ্ছেদ করে সেখানে মার্কেট নির্মাণের পাঁয়তারা করছে। এমন বাস্তবতায় মিরনজিল্লা কলোনিসহ দেশের সব হরিজন কলোনি থেকে স্থায়ী পুনর্বাসন ছাড়া হরিজন সম্প্রদায়ের লোকদের উচ্ছেদ বন্ধ করতে হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পূর্বের ৯৭৯ আদেশটি পুনর্বহাল রাখা এবং সাচিবিক আদেশ প্রত্যাহার করা।
যেসব জেলা, উপজেলা, রেলওয়ে ও হাটবাজারে হরিজনদের আবাসন রয়েছে, সেগুলো স্থায়ীভাবে দলিল করে হরিজনদের নামে বরাদ্দ দিতে হবে। হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষদের ভূমিহীন বিবেচনায় নিয়ে স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় হরিজন সম্প্রদায়ের লোকদের চাকরির ব্যবস্থা করা। সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে ঝাড়ুদার/ক্লিনার/সুইপার পদে আউটসোর্সিং নিয়োগ বন্ধ করে হরিজনদের জন্য দেওয়া ৮০ ভাগ কোটার বাস্তবায়ন করতে হবে এবং শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের জন্য অন্য পদে চাকরির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেগ চাকরির কোটা প্রবর্তনে পরিপত্র প্রদানসহ সব নির্দেশনার বাস্তবায়ন করতে হবে।
২০১২ সালের ২৯ মে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেগ স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে হরিজন শিক্ষার্থীদের জন্য কোটা প্রবর্তন করা।
হোটেল, রেস্টুরেন্ট, কর্মস্থলসহ অন্য সব ক্ষেত্রে হরিজনদের প্রতি বৈষম্য বন্ধে সংসদে উত্থাপিত বৈষম্য নিরোধ আইন পাস করার পূর্বে হরিজন জনগোষ্ঠীর মতামত নেওয়া এবং প্রস্তাবিত আইন মোতাবেক সব কমিটিতে হরিজন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি নিশ্চিত করার পাশাপাশি হরিজন কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করতে হবে।
সকালে শহীদ মিনারে ডাকা সংহতি সমাবেশে হাজারো হরিজন নারী-পুরুষ যোগ দেন। স্কুলের পোশাকে আসেন এ সম্প্রদায়ের শিশুরা। তারা দুপুরে ব্যানার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় পুলিশ আটকে দেয়। তারপর ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ডাক ও বিতরণ শাখা বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণ লাল ও মহাসচিব নির্মল চন্দ্র দাস স্বাক্ষরীত স্মারকলিপি গ্রহণ করে।
সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন- ঢাকা মহানগর হরিজন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনু দাস, হরিজন সেবক সমিতির সভাপতি কৃষ্ণ চরণ কুঞ্জলাল, হরিজন ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি লেবু ভাস্কর, সাংগঠনিক সম্পাদক পান্না লাল ভাস্কর।
এর আগে শহীদ মিনারে সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ, সাংগঠনিক সম্পাদক পদ্মাবতী দেবী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।
মন্তব্য করুন