বাংলা বর্ষবরণ আয়োজনের সময় সংকোচন করা সরকারের সিদ্ধান্ত মানেনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। রোববার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে ‘বর্ষবরণ মানে না শৃঙ্খল’ শিরোনামে উদীচীর আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
বাংলা বর্ষবরণ আয়োজনের অনুষ্ঠান সরকার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হয় উদীচীর এ আয়োজন। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি হাবিবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই সময় সংকোচনসহ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি ছোট নাটিকা পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। এরপর একক সংগীত পরিবেশন করেন হাবিবুল আলম, হরেকৃষ্ণ দেবনাথ এবং সাজেদা বেগম সাজু।
অনুষ্ঠানে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, কয়েক বছর ধরেই বর্ষবরণ উৎসবকে নির্দিষ্ট সময়ের ঘেরাটোপে বেঁধে দেওয়ার একতরফা পদক্ষেপ নিয়ে আসছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও সারা দেশে আয়োজিত পহেলা বৈশাখের সব উন্মুক্ত অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু উদীচী মনে করে, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপনে হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কাছে নির্জলা আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছুই নয়। এর মাধ্যমে পক্ষান্তরে আবহমান বাংলার সংস্কৃতিবিরোধী অন্ধকারের শক্তিকেই আস্কারা দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের অযাচিত সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।
তিনি আরও বলেন, সরকারের এ ধরনের অযাচিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পহেলা বৈশাখ সন্ধ্যা ৬টায় ‘বর্ষবরণ মানে না শৃঙ্খল’ শিরোনামে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে উদীচী।
এ ছাড়া, সারা দেশে উদীচীর আয়োজনে সমমনা সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়ে যে বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ উৎসব হয় তা-ও যথানিয়মেই আয়োজন করা হয় বলে জানান অমিত রঞ্জন দে।
সভাপতির বক্তব্যে হাবিবুল আলম বলেন, পহেলা বৈশাখ আবহমান বাংলার এক অনন্য অসাম্প্রদায়িক উৎসব। এ উৎসবকে অযথা সীমিত করার অপচেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেবে না উদীচীসহ দেশের শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মীরা। তাই এর প্রতিবাদে বারবারই গান, নাচ, নাটকের মতো সৃজনশীল হাতিয়ার নিয়ে মাঠে নামবে উদীচী।
মন্তব্য করুন