ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে অপেশাদার আচরণ ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এতে বিরক্ত হয়ে সংস্থাটির আরেক প্রকৌশলীর কাছে চিঠি দিয়েছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সাতত্য। প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্য, প্রায় তিন কোটি টাকা বিল বকেয়া, তারা সাড়ে তিন বছর ধরে সেবার বিপরীতে কোনো ধরনের বিল পাচ্ছে না। তবুও নগরের উন্নয়নমূলককাজে সিটি করপোরেশনকে সহযোগিতা করলেও এই সেবা আর দিতে চায় না তারা।
ডিএসসিসির অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে (দ্বিতীয় সংশোধিত) পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সাতত্য ও জেপিজেড নামে দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে ডিএসসিসি এলাকায় ১৯টি পার্ক ও ১২টি খেলার মাঠের উন্নয়নকাজ হচ্ছে। এসব উন্নয়নকাজে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে সাতত্য। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার স্থপতি রফিক আজম। প্রধান প্রকৌশলীর দুর্ব্যবহারে বিরক্ত হয়ে প্রকল্পের পরিচালক ও দক্ষিণ সিটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকেরকে গত মঙ্গলবার চিঠি দিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ওসমানী উদ্যানের উন্নয়নকাজের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সাতত্য। এই উদ্যানের উন্নয়নকাজ নিয়ে একটি বৈঠকে সাতত্যের প্রতিনিধি প্রকৌশলী ইলিয়াছ মিয়া অংশ নিলে ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান তার সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করে তাকে সভাকক্ষ থেকে বের করে দেন। ডিএসসিসিকে এতদিন প্রতিষ্ঠানটি যে সেবা দিয়ে আসছিল, তা আর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
যোগাযোগ করা হলে স্থপতি রফিক আজম কালবেলাকে বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছিল ২০১৭ সালে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালের জুন মাসে। এরপরও নগরের সৌন্দর্যবর্ধনে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সিটি করপোরেশনকে সহযোগিতা করে আসছেন তারা। কিন্তু সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সবসময় খারাপ আচরণ করছেন, দুর্ব্যবহার করেন। সর্বশেষ একটি বৈঠকে অংশ নিতে গেলে তার প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ইলিয়াছ মিয়াকে দক্ষিণ সিটির প্রধান প্রকৌশলী সভাকক্ষ থেকে বের করে দিয়েছেন। এতে তারা কষ্ট পেয়েছেন, লজ্জিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, নিজের পকেটের টাকা দিয়ে কাজ করছি। আমাদের তিন কোটি টাকার বিল বকেয়া। ওসমানী উদ্যানের কাজ শুরু করতে আমরা সর্বোচ্চ সহায়তা করেছি। বিল ছাড়াই আমরা সব কাজ করেছি। এরপর টেন্ডার হয়েছে। এখনও আমরা তত্ত্বাবধান করছি। আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে ওয়ার্কশপ করেছি।
অনানুষ্ঠানিকভাবে বলেছি, আমাদের টাকা পরে দিলেও সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের যাতে বেইজ্জতি করা না হয়। তবুও প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান অব্যাহতভাবে আমাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অপেশাদার আচরণ করেন। তার এমন অসম্মানজনক আচরণ তারা মেনে নিতে না পেরে বিষয়টি চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আশিকুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। প্রকল্পের পরিচালক ও দক্ষিণ সিটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকেরের কাছে চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি।
মন্তব্য করুন