ইংরেজি বর্ষবরণ রাতে ঢাকার দুই জায়গাতে আগুন লাগার ঘটনার বিবরণ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সোমবার (০১ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
ডিএমপির বংশাল থানার ওসি মো. মইনুল ইসলাম জানিয়েছেন, বংশালে কাজী আলাউদ্দিন রোড়ে একটি দোকানে লাগা আগুন বর্ষবরণে ফোটানো আতশবাজি বা ফানুসের থেকে নয়। ইংরেজি বর্ষবরণ রাতে অনুমানিক ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে বংশাল থানার ৩৪ কাজী আলাউদ্দিন রোডস্থ ‘সাফোয়ান এন্টারপ্রাইজ’ নামক দোকানের ভেতর থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, দোকানটি টেক্সটাইল ডাইং, টান্সফার প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, স্কিন প্রিন্টের রং ও কেমিক্যালের পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়ের দোকান। দোকানটি বন্ধ অবস্থায় ছিল। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সংবাদ পেয়ে সাথে সাথে ডিউটিরত পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। দোকানের সাঁটার তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তারা। দোকানটির ভেতর থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আসতেও দেখতে পান তারা। সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসকে সংবাদ পাঠায় দলটি।
ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। তারপর তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে জ্বলতে থাকা আগুন প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
এ দোকানটি ছাড়া অন্য কোনো দোকান বা বাসাবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে যে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের কারণে আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে। ঘটনাস্থলে ওই দোকান মালিককে পাওয়া যায়নি। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তবে অনুমান প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনার বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ডিএমপির কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, লালবাগের কামরাঙ্গীরচরে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনকে কেন্দ্র করে দুর্ঘটনায় ৩ জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছে।
ইংরেজি বর্ষবরণ রাতে অনুমানিক ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে কামরাঙ্গীরচর থানাধীন ৬৯৪ পশ্চিম ইসলাম নগর মজিবর ঘাট এলাকার একটি বাসার চিলে কোঠার ছাদে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে কামরাঙ্গীরচর থানায় ৬৯৪ পশ্চিম ইসলাম নগর মজিবর ঘাটস্থ বাসার ছাদে ১০-১৫ জন লোকের সমাগম হয়। এ সময় ভিকটিম সিয়াম (১৪) এক হাতে আগুন লাগানো কাঠি সামনে নিয়ে পেট্রোল লাগিয়ে ওপর দিকে ছুড়ে মারতে যায়। এ সময় অসাবধানতাবসত তার গায়ে আগুন লেগে যায়। ভিকটিমের গায়ে সিনথেটিকের ট্রাউজার থাকায়, আগুন দ্রুত সময়ের মধ্যে তার গায়ে লেগে যায়। তখন ভিকটিম সিয়াম (১৪) চিলে কোঠার ছাদ থেকে বিল্ডিংয়ের ছাদে পড়ে যায়। ওই সময় ঘটনাস্থলে থাকা তার দুই চাচা কম্বল নিয়ে আগুন নিভাতে গেলে তারাও সামান্য দগ্ধ হন। পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে নিয়ে ভর্তি করেছেন।
জানা গেছে, ভিকটিম সিয়ামের শরীরের ৯০ শতাংশ আগুনে দগ্ধ হয়েছে। সিয়ামের বাবার নাম স্বপন বেপারী।
ওসি জানান, সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং ভিকটিমের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এ ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন