ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ‘ডিএনসিসির আওতাধীন খাল, মাঠ, পার্ক, রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান শুরু হয়েছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে এ অভিযান চলতে থাকবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মোহাম্মদপুর হাইক্কার খালের সব অবৈধ স্থাপনা ও ভবন উচ্ছেদ করা হবে। আমি নিজে উপস্থিত থাকব। অবৈধ দখলদারদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে মোহাম্মদপুর সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর বাসিন্দাদের সঙ্গে গণশুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন।
টিসিবি কার্ডের তালিকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘পূর্বে তৈরি করা টিসিবি কার্ডের তালিকা নিয়ে সব জায়গা থেকে অভিযোগ পাচ্ছি। আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছি এগুলো যাচাইবাছাই করে সঠিক তালিকা প্রণয়ন করার জন্য। নতুন তালিকা প্রণয়নে কোনোভাবেই রাজনৈতিক প্রভাব থাকতে পারবে না। সঠিক ব্যক্তিকে টিসিবি কার্ডের জন্য নির্বাচন করা হবে।’
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘ফুটপাতে হকারদের উচ্ছেদে অভিযান শুরু হয়েছে। আমরা জানি হকারদের এই কার্যক্রমের পেছনে চাঁদাবাজদের চক্র রয়েছে। চাঁদাবাজ চক্রে জড়িতদের বলছি আপনারা এসব বন্ধ করে। হকারদের উচ্ছেদের জন্য চাঁদাবাজদেরও ধরা হবে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক জায়গায় লাইট নষ্ট হয়ে যাওয়ার তথ্য পাচ্ছি। ডিএনসিসির বিদ্যুৎ সার্কেলকে নির্দেশ দিয়েছি নষ্ট বাতিগুলো দ্রুত মেরামত করা হবে।’
রাস্তা ও ড্রেন খোঁড়াখুড়ির বিষয়ে এক নাগরিকের প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘আগামী ৩০ মে তারিখের মধ্যে ডিএনসিসি এলাকার রাস্তা ও ফুটপাতের খোঁড়াখুড়ি মেরামত করা হবে। নতুন করে কোন খোঁড়াখুড়ির করতে দেওয়া হবে না।’
নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানো ও পরিছন্নতার কাজ করা হয় না উল্লেখ করে এক নাগরিক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বলেন। জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক জানান, ‘নির্দিষ্ট এলাকার জন্য ঝাড়ুদার ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের তালিকা প্রণয়ন করে সেটি ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। আপনাদের এলাকায় কাজ না করলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবেন। দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এসময় তিনি জানিয়েছেন দ্রুতই ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ চালু হবে।
প্রসঙ্গত, ডিএনসিসির আওতাধীন ১০টি অঞ্চলের নগরবাসির সমস্যার কথা জানতে গণশুনানির আয়োজন শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গণশুনানিতে সরাসরি অংশ নিচ্ছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। ইতোমধ্যে অঞ্চল ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ এর সব ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে গণশুনানি সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোত অনুষ্ঠিত হবে।
মোহাম্মদপুর সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত গণশুনানিতে অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৪ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন স্কুল-কলেজের শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, বাজার কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও নেতা, সোসাইটির নেতা, যুবক ও ছাত্র প্রতিনিধি এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা অংশ নেন।
গণশুনানিতে অংশ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের এলাকার নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে মশার উৎপাত, ফুটপাত বেদখল, স্ট্রিট লাইট সচল না থাকা, জলাবদ্ধতা, খাল উদ্ধার, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, কিশোর গ্যাং, খেলার মাঠ ও সড়ক মুক্ত করার দাবি করেন স্থানীয়রা। গণশুনানিতে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন