ঝিলমিল আবাসিক এলাকায় স্কুল ও মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়িতব্য ঝিলমিল আবাসিক এলাকায় একটি মসজিদ ও একটি স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম। এসময় তিনি ঝিলমিল সোসাইটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
ঝিলমিল আবাসিক এলাকার ভবিষ্যৎ বাসিন্দাদের কাছে নাগরিক সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রকল্পের ২ নম্বর সেক্টরে ০.৭৪ একর জমিতে নির্মিতব্য চারতলা একটি মসজিদ এবং ০.৯৪ একর জমির ওপর নির্মিতব্য ছয়তলা ঝিলমিল স্কুল ও কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাজউক চেয়ারম্যান। এ সময় তিনি মসজিদ ও স্কুলের সামগ্রিক নির্মাণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এরপর তিনি রাজউক ঝিলমিল প্রকল্পের প্রকল্প কার্যালয়ে প্রকল্পে বরাদ্দ গ্রহীতাদের নিয়ে গঠিত ঝিলমিল সোসাইটির প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় সভায় ঝিলমিল সোসাইটির সভাপতি বিচারপতি (অব.) কে এম জহিরুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু প্রকল্পের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণের জন্য বরাদ্দগ্রহীতাদের পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজউক চেয়ারম্যান তাদের অবহিত করেন যে, অতিদ্রুত ঝিলমিল আবাসিক এলাকাকে জনবহুল এবং নাগরিক সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও রাস্তা আলোকিত করণের জন্য স্ট্রিট লাইটের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়াও আবাসিক এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে একটি মডেল পুলিশ থানা স্থাপিত হবে যার জন্য ইতোমধ্যে জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। একইসাথে প্রবেশ গেটসমূহে অধিক সংখ্যক আনসার সদস্য মোতায়েনসহ নিয়ম মাফিক বন্ধ ও খোলা রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ঝিলমিল প্রকল্পের মতো পরিকল্পিত এবং সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এত বৃহৎ পরিসরের আবাসিক এলাকা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে খুব কম আছে। প্লট বরাদ্দপ্রাপ্তরা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু না করলে ওয়াসা এবং অন্যান্য সংস্থা সমূহ যারা সর্বদা এই প্রকল্পে নাগরিক সুবিধা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে, তারা তাদের কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গরূপে শুরু করতে পারছে না। আমি সকল বরাদ্দগ্রহীতাদের আহ্বান জানাচ্ছি পুরোদমে ব্যক্তিগত ভবনসমূহ নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করার জন্য। এ জন্য যে কোনো ধরনের সেবা প্রদানে রাজউক সদা সচেষ্ট রয়েছে।
সভায় রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) মো. হারুন-অর-রশীদ বলেন, ঝিলমিল প্রকল্পের সকল নির্মিতব্য স্থাপনা রাজউক এর নিয়ম মেনে করতে হবে। ভবন নির্মাণে যে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে তার বিরুদ্ধে আইনানুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম, ঝিলমিল আবাসিক এলাকা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আমিনুর রহমান, সংশ্লিষ্ট জোনের পরিচালক রাজিয়া সুলতানা প্রমুখ।
প্রকল্প সম্পর্কে রাজউক থেকে জানানো হয়, সব ধরনের নাগরিক সুযোগ সুবিধাসহ ঢাকার কেরানীগঞ্জে রাজউক কর্তৃক বাস্তবায়িতব্য ৩৮১.১৯ একর জায়গা নিয়ে ঝিলমিল আবাসিক এলাকা গড়ে উঠছে। যেখানে রয়েছে ১হাজর ৭০০ এর অধিক প্লট। নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতকরণে ইতোমধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২টি উপকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ এবং ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক পানি সরবরাহ নেটওয়ার্কে কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও প্রকল্পের ২২ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় ছয়তলা বিশিষ্ট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দাপ্তরিক কার্যক্রম ইতিমধ্যে চালু হয়েছে। দ্রুত বরাদ্দকৃত জমিতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল ভবন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে।
মন্তব্য করুন