মশক নিধনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবক যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই বর্ষায় তারা ডিএনসিসির প্রতিটি এলাকায় গিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে মানুষকে সচেতন করবে। এ ছাড়াও ডিএনসিসির মশক কর্মীদের নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর কাজে তদারকি বাড়ানো হবে। কোনো কর্মীর অবহেলা পেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে ডিএনসিসির অঞ্চল-০১ এর অন্তর্গত সব ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে গণশুনানিতে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ ছাড়াও বর্তমানে যেসব মশার ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো কতটা কার্যকরী তা ল্যাবে আরও পরীক্ষা নীরিক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ডিএনসিসির মশক কর্মীদের কাজ যেন সঠিকভাবে তদারকি হয় সেজন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার সোসাইটি গুলোকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নগরবাসীর উদ্দেশ্যে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, সিটি করপোরেশনের কর্মীদের পাশাপাশি প্রত্যেকে নিজ নিজ বাসাবাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। কর্মীদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ পাওয়া যায় এটা ঠিক। কিন্তু আমাদের কর্মীরা কিন্তু সবার বাড়ির ভিতরে গিয়ে ওষুধ দিতে পারে না এটাও সত্যি। তাদেরকে তো বাউন্ডারির বা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। আপনারা সবাই একটু খেয়াল করলেই দেখবেন বেশিরভাগ বাড়ির ভেতরে ও বাউন্ডারিতে মশার প্রজনন ক্ষেত্র রয়েছে, ময়লা আবর্জনা রয়েছে। অতএব দয়া করে নিজেদের ঘরবাড়ি নিজেরা পরিষ্কার করুন।
নগরবাসীর এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, আমরা অভিযোগ পাচ্ছি পার্ক ও মাঠে জনসাধারণ সবসময় প্রবেশ করতে পারে না। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছি আজ থেকে ডিএনসিসির মালিকানাধীন সব পার্ক ও মাঠ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কোনো পার্ক ও মাঠে ডিএনসিসির অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারবে না। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানীয় কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে মেইনটেন্সের জন্য কমিটি করে দিবে। তারা মাঠ পার্ক দেখভাল করবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
উত্তরখানের এক বাসিন্দা রাস্তার কাজের গতি বাড়ানোর বিষয়ে প্রশ্ন করলে ডিএনসিসি প্রশাসক জবাবে বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে ঘোষণা দিয়েছি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে অবকাঠামো উন্নয়ন অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নতুন ওয়ার্ডগুলোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কাজের গতি বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে উত্তরখানের প্রধান রাস্তাটির কাজ সম্পন্ন করে উদ্বোধন করে দিয়েছি। নতুন ওয়ার্ডে অন্য এলাকার তুলনায় অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
হকাররা ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে জনগণের ভোগান্তির প্রশ্নে প্রশাসক বলেন, আমরা রোজার মাসে মানবিক কারনে অভিযান বন্ধ রেখেছিলাম। আগামী সপ্তাহ থেকে ফুটপাত ও রাস্তা দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে। জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি করে ফুটপাত ও রাস্তায় কোনো ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বিষয়ে প্রশাসক বলেন, প্রধান সড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধে ইতিমধ্যে ডিএমপি ট্র্যাপার (বিশেষ ফাঁদ) লাগানো শুরু করেছে। আমি ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে ট্র্যাপার নিয়ে কাজ শুরু করেছি, আইডিয়া শেয়ার করেছি। ডিএনসিসির সব মেইন রোডে অটোরিকশা চলাচল বন্ধে দ্রুত ট্র্যাপার লাগানো হবে।
নতুন এলাকার এক বাসিন্দা হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে প্রশাসক বলেন, যদিও দীর্ঘদিন আপনাদের আশানুরূপ সেবা প্রদান ও অবকাঠামো উন্নয়ন করতে পারেনি সিটি করপোরেশন কিন্তু হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ ও প্রদানের ক্ষেত্রে আইন রয়েছে। সেই আইন ভঙ্গ করে কয়েক বছরের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফের এখতিয়ার আমার নেই। এটা করলে আইন ভঙ্গ করা হবে এবং এর জন্য ভবিষ্যতে আমি এবং আপনারা বিপদে পড়বো।
মন্তব্য করুন