এখন থেকে রাজধানীতে পানি ও বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন সেবার ক্ষেত্রে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও ঠিকাদারদের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অনুমতি নিতে হবে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এ বিষয়ে ডিএমপি সদর দপ্তর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে যানচলাচল ব্যাহত হয় তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন সংস্থা বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে থাকে, যা পুনরায় মেরামত করতে অনেক সময় ৭-৮ মাস লেগে যায়।
এছাড়া বিকল্প রাস্তা তৈরি না করে খোঁড়াখুঁড়ি করা, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খোঁড়াখুঁড়ি করা, সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড না লাগানো, খোঁড়াখুঁড়ির মাটি বা আবর্জনা রাস্তার পাশে ফেলে রাখার পাশাপাশি উপকরণ (পাইপ, ক্যাবল) দীর্ঘসময় ফেলে রাখা, খোঁড়াখুঁড়ির পর বা পরবর্তীতে মেরামতের সময় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ না দেওয়া উল্লেখযোগ্য। এসব কারণে যানজট বেড়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি এবং সেই সাথে শ্রমঘণ্টা নষ্ট হয়ে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
শর্ত ভেঙে ঢাকা মহানগরীতে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাপারে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো:
. ডিএমপি সদর দপ্তরের সম্মতি ছাড়া রাস্তা কাটাকাটি বা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু না করা।
. সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে কোনো রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ না করা। এ ক্ষেত্রে রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করে সকালে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।
রাস্তা কাটার আগে যেসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে, সেগুলো হলো:
. কাজ শুরু এবং শেষ করার সময় (অর্থাৎ কোন তারিখে কাজ শুরু এবং শেষ হবে তা) আগেরই ঘোষণা করতে হবে এবং সে সময়ের মধ্যে অবশ্যই কাজ শেষ করতে হবে।
. রাস্তা খননের স্থান ও এর আগে-পরে ২০০ মিটার পর্যন্ত যথাযথ ট্রাফিক নির্দেশনা এবং ট্রাফিক সিগন্যাল লাইট লাগাতে হবে।
. নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল অবশ্যই নিয়োগ করতে হবে।
. পথচারী ও যানবাহন চলাচলের জন্য অবশ্যই বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
. কাটা রাস্তা ব্যবহার উপযোগী করার জন্য লোহার শিট রাস্তা কাটার আগেই সেখানে আনতে হবে।
. রাস্তার একটা লেইন রাতে কাটা যেতে পারে, তবে সেটা অবশ্যই সূর্যোদয়ের আগেই ব্যবহার উপযোগী করতে হবে।
. কোন অবস্থাতেই একই রাস্তার উভয় পাশে একসাথে খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না।
. ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের প্রতিনিধিসহ রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করতে হবে।
. কোনো রাস্তা রাতে সর্বোচ্চ সাতদিন খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করা যাবে এবং পরবর্তী তিন রাতের মধ্যে মেরামত করে দিতে হবে, এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংখ্যক শ্রমিক-টেকনিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা চেয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রতিষ্ঠান যদি রাস্তা কাটাকাটি-খোঁড়াখুঁড়ির এসব শর্ত ভঙ্গ করে ঢাকা মহানগরী এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কাজ বন্ধ করাসহ ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে রোজার সময় ঢাকায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি না করার অনুরোধ জানিয়েছিল ডিএমপি।
মন্তব্য করুন