রাজধানীর শাহজাদপুরের ভাটারায় আবাসিক হোটেল ভবনে লাগা আগুনের ঘটনায় অতিরিক্ত ধোঁয়ার কারণে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ঢাকা জোনের সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান।
সোমবার (০৩ মার্চ) আগুন নেভানোর পর ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
কাজী নজমুজ্জামান বলেন, ভবনটিতে আগুন লাগার পর হোটেলে থাকা চারজন ভয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা করেছিল। তবে এমন সময় ছাদে থাকা চিলেকোঠার দরজাটি বন্ধ ছিল। যার কারণে অতিরিক্ত ধোঁয়ায় তারা মারা যান।
তিনি বলেন, আগুন লাগার ১০ মিনিটের মধ্যে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। গিয়ে দেখলাম আগুন লাগা ভবনটি ছয়তলা। নিচতলা হার্ডওয়্যারের দোকান, দ্বিতীয়তলায় বিউটি পার্লারের দোকান, তৃতীয় তলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত আবাসিক ভবন। দুই তলায় প্রচণ্ড আগুন এবং ধোঁয়া ছিল। ঘটনাস্থলে মোট ৪টি ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট কাজ করে। প্রায় ৩০ মিনিটের মধ্যে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ভবনটির চিলেকোঠায় তিনজনের মরদেহ এবং একজনকে বাথরুম থেকে উদ্ধার করা হয়। ছাদে যাওয়ার জন্য চিলেকোঠার দরজা বন্ধ ছিল। অর্থাৎ প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে আবাসিক হোটেলের ভেতরে যারা ছিল তারা বাঁচার জন্য ওপরের দিকে উঠে যায়। ওপরে উঠতে গিয়ে তারা দেখতে পায় ছাদের দরজা বন্ধ। এরপর তারা আর সেখান থেকে বের হতে পারেননি। এজন্য ধোঁয়ার কারণে চারজনের মৃত্যু হয়। চারজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগুনের কারণ এখনই বলা যাচ্ছে না। মালিক কর্তৃপক্ষের কাউকে আমরা পাইনি। কমিটি গঠনের পর তদন্ত করে আগুনের প্রকৃত কারণ নির্ণয় করা হবে।
তিনি বলেন, রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী বিল্ডিংটি তৈরি করা হয়নি। ভবনটিতে কোনো ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। সিঁড়িগুলো ছিল সরু। সিঁড়ির পাশে যে জানালা ছিল সেগুলো কাচ দিয়ে বন্ধ করা ছিল। কাচ দিয়ে বন্ধ না থাকলে ধোঁয়া বের হয়ে আসতে পারতো।
এর আগে সোমবার দুপুর ১২টা ১৭ মিনিটের দিকে শাহজাদপুরের সৌদিয়া নামের একটি আবাসিক হোটেলের ভবনে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট কাজ করে দুপুর ১টা ৪ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ছয়তলা হোটেলটি দ্বিতীয় তলায় আগুন লেগেছিল।
মন্তব্য করুন