রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের হাসান নগর এলাকার ছাপাখানা ব্যবসায়ী মো. নূর আলম হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলো- মিরাজ মিয়া (২০), মো. শিপন ওরফে সম্রাট (২৫) ও মো. রিফাত (১৯)। এ সময় তাদের থেকে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত একটি হাতুড়ি, একটি কাঁচি ও দুটি চাকু উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. জসিম উদ্দিন এ তথ্য জানান।
কামরাঙ্গীরচর থানা সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম মো. নূর আলম কামরাঙ্গীরচর থানার হাসান নগর ভান্ডারী মোড়ে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ফেব্রিক্সের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। গত ৬ ডিসেম্বর সকালে ভিকটিম নূর আলম তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রামের বাড়িতে যাবার জন্য তার স্ত্রীকে ফোন করে। এ সময় ভিকটিমের স্ত্রী কয়েকজন লোকের সঙ্গে ভিকটিমের বাকবিতণ্ডার কথা শুনতে পান। এরপর থেকে ভিকটিমের ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার পর থেকে ভিকটিম মো. নূর আলম নিখোঁজ থাকায় ভিকটিমের জামাতা মো. আতাউল্লাহ খান সজিব কামরাঙ্গীরচর থানাকে বিষয়টি অবহিত করেন।
থানা সূত্র আরও জানায়, ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পর কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে। তারপর মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) কামরাঙ্গীরচরে ভিকটিমের ছাপাখানা থেকে কর্মচারী মিরাজকে গ্রেপ্তার করে থানার একটি দল। একই দিন কামরাঙ্গীরচরের ঝাউরাহাটি থেকে রিফাতকে ও কোতোয়ালি থানার সদরঘাট এলাকা থেকে শিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) আনুমানিক ভোর ৪টা ২৫ মিনিট থেকে ৪টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে গ্রেপ্তার শিপন, মিরাজ, রিফাত ও পলাতক জিহাদসহ অজ্ঞাত ২/৩ জনের সহায়তায় ভিকটিমের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে এবং মৃতদেহ বাথরুমে নিয়ে দুই খণ্ড করে। তারপর ভিকটিমের মৃতদেহ যাতে কেউ খুঁজে না পায় সেজন্য গুম করার উদ্দেশে মৃতদেহের খণ্ড দুটি পলিথিন ও কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে একটি বস্তায় ভরে ছাপাখানার ভেতরে টেবিলের নিচের মেঝে ভেঙে মাটিচাপা দেয়। এরপর জায়গাটি বালু ও সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে।
গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ ছাপাখানার ভেতর থেকে মেঝের ঢালাই ভেঙে ভিকটিমের দুই খণ্ড মৃতদেহ উদ্ধার করে। এছাড়া ভিকটিমকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও চাকু এবং অন্য আলামত পুলিশ উদ্ধারপূর্বক জব্দ করে। অতঃপর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের জামাতা আতাউল্লাহ খান সজিব বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় গত ১০ ডিসেম্বর একটি হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অন্য আসমিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন