কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৩, ০৬:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘ভোক্তা আইন সংশোধন ও সময়োপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে’

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক ছায়া সংসদে বিজয়ী দলের বিতার্কিকদের ট্রফি প্রদান করছেন অতিথিরা। ছবি : সংগৃহীত
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক ছায়া সংসদে বিজয়ী দলের বিতার্কিকদের ট্রফি প্রদান করছেন অতিথিরা। ছবি : সংগৃহীত

প্রচলিত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনটি সংশোধন ও সময়োপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করা গেলে ভালো হয়।’

তিনি বলেন , সিন্ডিকেট, অবৈধ মজুদদার, কালোবাজারিদের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিদপ্তর তাদের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক ছায়া সংসদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় টিপু মুনশি বলেন, সিন্ডিকেট সবসময় সুযোগ খোঁজে, বাজারে কারসাজি করে মূল্যবৃদ্ধির জন্য। এসব অবৈধ কারবারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে আমরাও সদা সক্রিয়।

তিনি আরও বলেন, ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও পেয়াঁজের মতো পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারসাজির বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। ভোজ্যতেল, চিনি ও গমের মতো অনেক পণ্য ৯০ ভাগই আমদানিনির্ভর। যা মাত্র কয়েকটি কোম্পানি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এ পণ্যগুলো নিয়ে যাতে কোনো বাজার কারসাজি না ঘটে, তার জন্য আমরা সর্বদা সজাগ থাকি। তবে কোনো কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়াও সমাধান নয়। তাতে সাপ্লাই ও ডিমান্ডে ব্যাহত হয়ে ভোক্তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। তবে ব্যবসায়ীদের সততা, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের জাগরণই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে বিশেষ সহায়ক।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ভোজ্যতেল, চিনি, ডিম, ব্রয়লার মুরগিসহ বেশ কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ৫ থেকে ৬টি করপোরেট কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়াও মধ্যস্বত্বভোগীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে ক্রেতারা ন্যায্যমূল্যে পণ্য কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির কারসাজির সঙ্গে যে সকল বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বা করপোরেট কোম্পানিগুলি জড়িত সেগুলোকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামের অস্থিরতা তৈরির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে। প্রান্তিক খামারিরা করপোরেট কোম্পানিগুলোর কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। দেশে যে বিপুল সংখ্যক প্রান্তিক উদ্যোক্তা ডেইরি ফার্ম, পোল্ট্রির খামার ও এগ্রো ফার্ম করেছে তাদের বেশির ভাগই পুঁজি হারাচ্ছে। এসব প্রান্তিক খামারিদের বাঁচিয়ে রাখা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ল্যাবরেটরি টেস্টের নামে চলছে নৈরাজ্য। যে যার মতো রোগীদের কাছ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মূল্য নিচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর টেস্ট বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। হার্টের রিং নিয়ে চলছে তেলেসমাতি কারবার। রোগী, রোগীর স্বজনদের অসায়হত্বকে পুঁজি করে ছোট বড় সব হাসপাতাল যে যার মতো করে হার্টের রিংয়ের দাম রাখছে। যার সঙ্গে ডাক্তারসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যোগসাজশের অভিযোগ রয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিদপ্তর, র‌্যাব, পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দিয়ে দ্রব্যমূল্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা যাবে না। সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গণজাগরণ তৈরি করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন কিরণ।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ১০ দফা সুপারিশ পেশ করেন। সেগুলো হলো : দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রদান করা। ভোক্তা অধিকার আইনকে আরও আধুনিকায়ন ও শক্তিশালী করে অধিদপ্তরকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান করা। মজুদদারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা। সকল সংস্থার সমন্বয়ের মাধ্যমে বাজারে দ্রব্যমূল্য পরিবীক্ষণ করা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার সময় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত রাখার বিষয়ে নিশ্চিত করা। অনলাইনে শুনানির মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করা। ভোজ্যতেল, ডিম, ব্রয়লার মুরগি, ধান, চালসহ ভোগ্য পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারসাজির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর নামের তালিকা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তৈরি করে দৃশ্যমান শাস্তির ব্যবস্থা করা। পণ্যের নিরাপদ সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা। ব্যবসায়ীদের জন্য ভোক্তা অধিকারবিষয়ক অরিয়েন্টেশন কোর্স চালু করা এবং ভোক্তা অধিকার আইনের ব্যাপক প্রচার প্রচারণাসহ সিন্ডিকেট কালোবাজারির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির শাস্তি টিভিসি, বিলবোর্ডসহ বড় বড় বাজারগুলোর সামনে প্রদর্শন করা।

‘শুধু আইন দিয়ে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়’ শীর্ষক উদ্বোধনী প্রতিযোগিতায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরাজিত করে ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা, সাংবাদিক রেফায়েত উল্লাহ মৃধা। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শহীদ আমিনুলের সন্তানদের দায়িত্ব নিল ইত্তেফাকুল উলামা

রোববার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

মিছিলে বিএনপি নেতার গুলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রৌমারীতে ব্যবসায়ীদের আহ্বায়ক কমিটির শপথ অনুষ্ঠিত

৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়ায় মামুনের বিরুদ্ধে যুবদলের মামলা

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

ক্ষমা পেয়ে আমিরাত থেকে ১২ জন ফিরছেন চট্টগ্রামে

‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকার দুই ভাবে পরাজিত’

মহানবীকে (সা.) কটূক্তিকারী সেই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা

শিবচর আঞ্চলিক সড়কে গ্রামবাসীর বৃক্ষরোপণ

১০

মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকার চেষ্টার অভিযোগ ধামাচাপা, ৭ দিন পর ফাঁস

১১

১২ দিনেও মেলেনি রানীনগরে নিখোঁজ নার্গিসের সন্ধান

১২

দায়িত্বশীলদের নিয়ে সাতক্ষীরায় ছাত্র শিবিরের সমাবেশ

১৩

আযহারী শিক্ষার্থীরা হবে বাংলাদেশ ও মিশরীয় ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন : মিশরীয় রাষ্ট্রদূত

১৪

রাজশাহীতে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

১৫

আন্দোলনের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ কর্মীকে গণধোলাই

১৬

আশুলিয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে শ্রমিক সমাবেশ

১৭

কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

১৮

পাকিস্তানের জলসীমায় বিপুল তেল-গ্যাস মজুতের সন্ধান

১৯

বিসিবির দুর্নীতির তদন্ত দাবি সাবেকদের

২০
X