ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রিকশাচালকরা। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে রিকশাচালকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক আহম্মেদ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে দয়াগঞ্জ মোড়ে সড়ক অবরোধ করে রিকশাচালকরা। সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হলে পুলিশ তাদের অনুরোধ করে সড়ক ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা পুলিশের অনুরোধ না মেনে উল্টো পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়, যার ফলে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, বর্তমানে (বেলা ১টা) সড়ক অবরোধ উঠে গেছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে, গতকাল মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) হাইকোর্ট ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজী এই আদেশ দেন। আদালত সংশ্লিষ্টদের এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
তথ্য বলছে, রাজধানী ঢাকার সড়কে অবৈধভাবে চলছে প্রায় ৮ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা। প্রধান সড়কে আসার অনুমতি না থাকলেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ এ যান। গত দু’মাসে লক্ষাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও দৌরাত্ম্য থামছে না।
চলতি বছরের ১৫ মে সড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের ঘোষণা দেয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়। এরপর আন্দোলনে নামে রিকশা চালকেরা। এর ৫ দিন পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল সড়ক ছাড়া রিকশা চলাচলের অনুমতি দেন। তবে, সেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে চলাচল শুরু হয় মূল সড়কেও।
এরপর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন বলছে, সড়কে এখন চলছে অন্তত ৮ লাখ অটোরিকশা।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেপ্টেম্বর মাসে ৫০ হাজার, আর অক্টোবর মাসে ৬৬ হাজার এসব রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। ব্যাটারি জব্দ করে নিলামেও তোলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন