বায়ুদূষণ বিশ্ববাসীর জন্য এক বড় সমস্যা। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের বিভিন্ন শহরগুলোর বায়ুদূষণের মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। অস্বাভাবিকভাবে বায়ুদূষণ বৃদ্ধিতে মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যুঝুঁকি বেড়েই চলেছে। জনবহুল ঢাকার বাতাসেও বাড়ছে দূষণ। তবে আজ পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা খুবই ভয়াবহ।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৯টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার প্রকাশিত তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যার স্কোর ৭২২। আর ২৩৬ স্কোর নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ঢাকা। এ স্কোরকে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়।
একই সময়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি, যার স্কোর ৬৪৯। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের আরেক শহর কলকাতা, যার স্কোর ২৫৭ আর ১৯০ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের আরেক শহর করাচি।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (আইকিউএয়ার) এ তালিকা প্রকাশ করে থাকে। প্রতিমুহূর্তের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বায়ু কতটুকু নির্মল বা দূষিত হচ্ছে, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দিয়ে আসছে। আর তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানিয়ে থাকে।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ সহনীয় বা মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর।
১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। আর ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এটা সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলা।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ুদূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।
মন্তব্য করুন