জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বৃষ্টির মৌসুমে মনিরামপুরের ভবদহ এলাকায় জলাবদ্ধতায় প্লাবিত হয়ে লাখ লাখ মানুষের দুর্দশা সৃষ্টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এর ফলে স্থানীয়দের জীবন-জীবিকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বছরের পর বছর ধরে মানবিক বিপর্যয় সংগঠিত হওয়া সত্ত্বেও এ বিষয়ে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়া পদ্ধতিগত মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এ বিষয়ে কমিশন স্বঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এ অভিযোগ গ্রহণ করেন।
ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং কেন এতদিনেও এ সমস্যার সমাধান করা যায়নি তা কমিশন জানতে চায়। সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে পানিবন্দি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সমস্যার একটি প্রকৃত সমাধানের ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদান ও পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯-এর ১৭ ধারা অনুযায়ী পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারিভাবে এ অঞ্চলকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হয়নি। যশোর-খুলনা অঞ্চলের মানুষের দুঃখের একটি নাম হলো ভবদহ। বৃষ্টির মৌসুম এলেই এই অঞ্চলের মানুষের নির্ঘুম রাত কাটে। ভারি বৃষ্টি হলে এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তলিয়ে যায় ফসলের খেত, হাজার হাজার মাছের ঘের ও পুকুর। ক্ষতি হয় মানুষের কোটি কোটি টাকার সম্পদ। সরকার আসে, সরকার যায়, প্রকল্প আসে, প্রকল্প শেষ হয়ে যায়, কিন্তু ভবদহ এলাকার মানুষের সমস্যার কোনো সমাধান হয় না। বন্যা হলেই এখানকার মানুষ নওয়াপাড়া, খুলনা, যশোর ও মনিরামপুর শহর এলাকায় গিয়ে কেউ রিকশা বা ভ্যান চালায়, কেউ মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। কেউ শাপলা-কলমিশাক বিক্রি করে দিন চালায়। সম্প্রতি টানা কয়েক দিনের ভারি বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যায় এ অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে রাস্তার ওপর উঁচু জায়গায় টংঘর বেঁধে বসবাস করছে। বিশেষ করে ছিয়ানব্বই এলাকার কুলটিয়া, লাখাইডাঙ্গা, নেহালপুর, পাতাকড়ি ও কপালিয়া অঞ্চল বেশি বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের শত শত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা হাঁটুপানি ভেঙে কেউবা বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজে যায়।
মন্তব্য করুন