ঢাকায় সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক গাজী সাদেক আহত হয়েছেন। তিনি দৈনিক যুগান্তরের সহসম্পাদক।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড় এলাকায় প্রগতি ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় আহত সাংবাদিক ওই দিন রাত সাড়ে ১২টায় ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গাজী সাদেক কাজ শেষে কর্মস্থল দৈনিক যুগান্তরের অফিস থেকে শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় বের হন। বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন যাওয়ার উদ্দেশে কুড়িল বিশ্বরোড় এলাকার প্রগতি ফিলিং স্টেশনের সামনে ফ্লাইওভারের মাথায় রাত সোয়া ১০টায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করেন। এ সময় মোটরসাইকেলযোগে একজন আরোহী ফ্লাইওভারে উঠছিলেন। ফ্লাইওভার দিয়ে উল্টো পথে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে (গাজীপুর-১২-২২৫২) ৪/৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি মোটরসাইকেলটি চাপা দিয়ে আরোহীর গতিরোধ করে এবং মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাংবাদিক সাদেকসহ কয়েক পথচারী এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন এবং মোটরসাইকেল আরোহীকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সহায়তা করেন। মোটরসাইকেল আরোহী চলে গেলে সাদেকের সঙ্গে থাকা পথচারীরাও গাড়িতে ওঠে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে ওই সিএনজি থেকে চালকসহ তিন যাত্রী নেমে সাদেককে একা পেয়ে অস্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে। এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও রড় দিয়ে পিটিয়ে তাকে আহত করে। এ সময় আরেক পথচারি ঘটনার ভিডিও শুরু করলে হামলাকারীরা সাদেককে হুমকি দিয়ে তার মানিব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। হামলায় সাদেকের বাঁ হাত, মাথা ও পিঠে নালী ফোলা জখম হয় এবং তার চশমা ভেঙে যায়।
ঘটনার ভিডিও ধারণকারী ও প্রত্যক্ষদর্শী মো. আমানুল্লাহ বলেন, আমি মিরপুর-১৪ এর বাসিন্দা। গ্রাম থেকে আসা পরিবারের সদস্যদের আনতে আমি ওই স্থানে অপেক্ষা করছিলাম। শুরুতে একটি মোটরসাইকেল ও উল্টো পথে আসা সিএনজি মুখোমুখি অবস্থান নেয় এবং মোটরসাইকেলটি পিষে দেওয়ার চেষ্টা করে সিএনজিচালক। আরোহীকে মোটরসাইকেল থেকে নামার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। আমি এগিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করি। তখন সিএনজিচালকসহ যাত্রীরা আমার উপর চড়াও হয়। তারা নিজেদের স্থানীয় ও প্রভাবশালী দাবি করে হুমকি-ধমকি দেয়। এ সময় সাংবাদিক সাদেকসহ আরও কয়েকজন পথচারী জড়ো হন। তাদের আমি বিষয়টি জানাই এবং সবাই মিলে ঘটনা নিবৃত্ত করে মোটরসাইকেল আরোহীকে চলে যেতে সহায়তা করি। পরে সবাই যার যার মতো চলে গেলে সিএনজি থেকে চালকসহ যাত্রীরা নেমে সাংবাদিক সাদেকের ওপর এলোপাতাড়ি মারধর করে। বিষয়টি দেখে মোবাইলফোনে ভিডিও ধারণ শুরু করলে তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যায়। এরা একটি সঙ্ঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
আহত গাজী সাদেক বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় একটি সঙ্গবদ্ধ অপরাধী চক্র আমার ওপর নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে। ওই সিএনজিতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ছিল বলে তাদের কথোপকথনে আমি বুঝতে পেরেছি। একজন পথচারী ভিডিও ধারণ না করলে তারা আমাকে মেরে ফেলত। আমি ঘটনার বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি, দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত শাস্তি নিশ্চিত করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, হামলার ছোট একটি ভিডিও ক্লিপ তিনি পেয়েছেন। অপরাধীদের ধরতে অভিযান চলমান।
মন্তব্য করুন