বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা এবং গুল-জর্দা বা ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য খোলা অবস্থায় খুচরা বিক্রি করা হলে এসব পণ্যের সহজলভ্যতা বৃদ্ধি পায়। তামাকপণ্য খোলা ও খুচরা শলাকা হিসেবে বাজারে খোলা পাওয়া গেলে ছাত্র, তরুণ, কিশোর এবং স্বল্প আয়ের মানুষ খুব সহজে অল্প খরচে ক্রয় করার সুযোগ পায়। সেক্ষেত্রে তামাকপণ্যের খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধ নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র–ডর্প।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ডর্পের প্রধান কার্যালয়ে তামাকবিরোধী ক্যাম্পেইনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে অ্যাডভোকেসি বিষয়ক আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
সংস্থাটির অন্যান্য প্রস্তাবনাগুলো হলো: তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেট, ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট আমদানি, উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা; তামাক পণ্যের সব ধরনের খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কতার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।
দিনব্যাপী এই কর্মশালায় বিভিন্ন তামাকজাত পণ্যকে রুখে দিতে নানা গঠনমূলক আলোচনা ও অংশগ্রহণকারী যুবদের নিয়ে আগামী তিন মাসের কর্মকাণ্ডের তালিকা করা হয়। এই কর্মশালায় ২৫ শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
কর্মশালায় সিটিএফকে বাংলাদেশের প্রোগ্রামস ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও পিছিয়ে নেই তামাক সেবনে। বিশেষ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা বন্ধুদের সঙ্গে তামাক সেবন করে। এই তামাক সেবনের কারণে মানুষের বিশেষ করে আমাদের মা-বোনদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, তামাক পণ্যে ডর্পের প্রস্তাবিত তামাক কর বাস্তবায়ন করলে এর প্রভাব অবশ্যই পড়বে এবং প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া সম্ভব। এটা বাস্তবায়ন হলে ১০ লাখ তরুণ এবং প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষের ধূমপানজনিত অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে শুধু আইন করা নয়, আইনের বাস্তব প্রয়োগ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ডর্প বিগত ১৯৮৭ সাল থেকে দেশব্যাপী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রবর্তনকারী সংস্থা হিসেবে সমধিক পরিচিত। এখন পর্যন্ত ডর্প সারা দেশে ৫টি বিভাগে ৩০টি জেলায় ৭৪টি উপজেলায় বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ডর্প বর্তমানে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও তামাক কর বৃদ্ধি বিষয়ে কাজ করছে এবং সরকারের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
মন্তব্য করুন