সাম্প্রতিক বন্যায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে অবস্থিত ‘মুছাপুর ক্লোজার’ ভেঙে যাওয়ায় তা পুনঃনির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জ ফোরাম -ডিসিএফ।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জবাসীর অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও ফেনীর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। এসময় বিভিন্ন ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও বক্তৃতায় বাঁধ পুনঃনির্মাণের জোর দাবি উঠে আসে।
ফোরামের সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. মোয়াজ্জম হোসাইন বলেন, গত ২৬ আগস্ট নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বন্যা রক্ষাকবজ ‘মুছাপুর ক্লোজার’ পানির প্রবল চাপে ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। আর এতে করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৩টি ইউনিয়নসহ ফেনীর সোনাগাজীর ৩ টি ইউনিয়ন ব্যাপক নদীভাঙনের কবলে পড়ে। প্রায় ১০ হাজার পরিবার ঘর-বাড়ি নিয়ে অনিশ্চিত জীবন যাপন করেছে। যার ফলে ক্লোজার / টেকসই বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা অতিশিগগিরই কার্যকরী পদক্ষেপ কামনা করছি।
মানববন্ধনে উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সহ-সমন্বয়ক হাফিজুর রহমান ফাহিম বলেন, যেখানে জীবন ও সম্পদ চরম হুমকির মুখোমুখি সেখানে কোন অবস্থাতেই বিলম্ব কাম্য নয়। ১৪৩ কোটির ক্লোজার-ব্রীজ ভেঙে যাবার পেছনে কি শুধুই বন্যার পানি, না কি আরও কিছু আছে তাও ক্ষতিয়ে দেখতে হবে।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও দাগনভূঞা-সোনাগাজী উন্নয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক। তিনি বলেন, মুছাপুর ক্লোজার নোয়াখালীর জন্য রক্ষাকবজ হলেও ইতিমধ্যে তা একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রেও রূপ নেয়। জনশ্রুতিতে এর আরেকনাম ‘মিনি কক্সবাজার’। দূর-দূরান্তের অসংখ্য মানুষের এখানে আগমনের কারণে বর্তমানে এর বাণিজ্যিক গুরুত্বও রয়েছে। সব বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হোক।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোম্পনীগঞ্জ উপজেলা আমির ও বিশিষ্ট সমাজসেবক অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ২০০৫ সালে এই ক্লোজার ও ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর নির্মাণ করা হয়। কিছু অসাধু লোকের বালু উত্তোলনের কারণে এর নিচের মাটি সরে যাওয়ায় ক্লোজার দুর্বল হয়েছে বলে মনে করি। বালু দুর্বৃত্তদের অধিক লোভে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা পানিতে তলিয়ে গেলো। ক্লোজার পুনঃনির্মাণের ক্ষেত্রে বালু উত্তোলনের বিষয়েও কঠোর নির্দেশনা থাকা জরুরি। ফোরামের সেক্রেটারি শিক্ষাবিদ মুহাম্মাদ জহির উদ্দিন বলেন, নদী তীরবর্তী মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। এমতাবস্থায় সুপরিকল্পিত তড়িৎ পদক্ষেপ না নিলে আরও বহু মানুষ সহায়সম্পদ ও জীবন হারাবে বলে আশঙ্কা করি।
এছাড়াও বাঁধ পুনঃনির্মাণ ও ভিটে-মাটি-জীবন রক্ষায় অনতিবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, চরপার্বতী ফোরামের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, রংমালা ফোরামের সভাপতি নূর উদ্দীন জাহাঙ্গীর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক সেক্রেটারি মাকসুদ জামিল, কোম্পানীগঞ্জ স্টুডেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি হাফেজ আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানটি সার্বিকভাবে তদারকি করেন ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জ ফোরাম এর সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. মুহাম্মদ ইউনুস সুমন।
মন্তব্য করুন