শাহবাগ ছেড়েছেন আন্দোলনরত রিকশাচালকরা। এ সময় তারা অটোরিকশা বন্ধে ৫ দিনের আলটিমেটাম দেন। এই সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
ঢাকা সিটি করপোরেশন রিকশা মালিক ঐক্যজোট ৭ দফা দাবিতে এবং জাতীয় রিকশা ও ভ্যান চালক সংগঠন ১০ দফা দাবিতে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শাহবাগ অবরোধ করেন। এতে শাহবাগ মোড় ও আশপাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রিকশাচালকরা শাহবাগ ছাড়লে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ঢাকা সিটি করপোরেশন রিকশা মালিক ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক মো. মমিন আলী বলেন, আমরা আমাদের সাত দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছি। তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়েছেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন, সভাপতি জহুরুল ইসলাম মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কুমার ভৌমিক, সহ সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন।
তিনি বলেন, আমরা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়েছি। দাবি মানা না হলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। আমরা রিকশার বৈধ মালিক। আমরা এক লাখ ৪৩ হাজার লাইসেন্সধারী বৈধ রিকশার মালিক। আমরা সরকারকে ট্যাক্স দেই।
তবে দাবিদাওয়া নিয়ে এখনো কোনো আশ্বাস পাননি বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের আগামীতে কোনো কর্মসূচি নেই তবে দাবি না মানলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে।
ঐক্যজোটের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মতো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে রিকশা মালিকানার নতুন লাইসেন্স প্রদান ও পুরোনো লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে; সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ও বৈধ লাইসেন্সধারী রিকশা পেশাজীবীদের স্বার্থে ঢাকা উত্তর/দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে চালক লাইসেন্স প্রদান করতে হবে। অসুস্থ চালকদের ফ্রি ফ্রাইডে মেডিকেল চিকিৎসা প্রদান করতে হবে; ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স প্রাপ্ত রিকশা পেশাজীবীদের ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করতে হবে।
এ ছাড়াও রিকশা বাঙালি মুলুকের প্রাচীন বাহন হিসেবে (নৌকা, পালকি, ঘোড়াগাড়ি) এর মতো রিকশাকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ন্যায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও জাতীয় জাদুঘরে স্থান দিতে হবে; দুর্নীতিবাজদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে দিতে হবে এবং আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে; উত্তর সিটি করপোরেশনে গুলশান, বারিধারা ও বসুন্ধরাসহ যেসব এলাকায় বিশেষ পোশাকে রিকশা বাহিনী গড়ে তুলেছে তা বন্ধ করতে হবে।
কয়েকজন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে তাদের আয় কমে গেছে বলে সড়কে এসে প্রতিবাদ করছেন তারা। ধানমন্ডি এলাকা থেকে আসা রিকশাচালক উজ্জ্বল বলেন, তারা বেশ কয়েকজন রিকশাচালক একসঙ্গে এসেছেন এখানে প্রতিবাদ জানাতে।
তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশাওয়ালারা আসায় আমাদের রিকশায় কেউ উঠতে চায় না। তাদের কারণে রাস্তায় অনেক সমস্যাও হয়। আমরা চাই তারা গলিতে রিকশা চালাক, কিন্তু মেইন রোডে না।
আরেক রিকশাচালক আলমগীর বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে তারা যাত্রী পান না। তাদের কারণে আমাদের প্রতিদিন রিকশার জন্য যে ভাড়া দিতে হয় সেটাও উঠছে না। কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের দাবি ব্যাটারিচালিত রিকশা গলিতে চলুক কিন্তু মেইন রোডে না।
মন্তব্য করুন