বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি আজ। সোমবার (৫ আগস্ট) এই কর্মসূচি ঘিরে ঢাকায় ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে চায় আন্দোলনকারীরা। তারা কারফিউ উপেক্ষা করার ঘোষণা দিয়েছেন আগেই।
তবে পরিস্থিতি যেন কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সে জন্য শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।
সোমবার সকাল ৭টার কিছুক্ষণ পর যাত্রাবাড়ীতে দেখা যায় পুলিশ সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়া চেক করে করে ঢোকানো হচ্ছে রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি যাত্রীদের। একটু সামনে যেতেই দেখা যায় যানবাহন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠি হাতে আরও কিছু পুলিশ সদস্য।
গুলিস্তানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখা গেছে। সেখানে পুলিশের কোনো উপস্থিতি চোখে পড়েনি। তবে চানখারপুলে ছিল ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতি। যারা জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা মেডিকেল বা অন্য কোথাও যাচ্ছিলেন তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যেতে দেওয়া হয়। সকাল ৮টা পর্যন্ত এসব এলাকায় আন্দোলনরত কোনো শিক্ষার্থীকে দেখা যায়নি।
এদিকে বসিলা ব্রিজে ওঠার শুরুতেই কয়েক ট্রাক দিয়ে মাটি ফেলে রাস্তা প্রায় পুরোপুরা ব্লক করা হয়েছে।
মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড় পুলিশ ও বিজিবির ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। আল্লাহকরিম জামে মসজিদের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ জুলাই রাতে সারা দেশে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এর পরে ২১ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত নির্বাহী আদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। সেই সপ্তাহের শেষ দুদিন অবশ্য বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সীমিতভাবে সরকারি-বেসরকারি অফিস চলে।
পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হলে গত সপ্তাহের শুরুর ৩ দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস খোলা রাখা হয়। এরপর বুধবার (৩১ জুলাই) থেকে স্বাভাবিক সময় ধরে চলছে সব সরকারি-বেসরকারি অফিস।
তবে শনিবার (৩ আগস্ট) থেকে পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হতে থাকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সরকার পদত্যাগের একদফা দাবি ঘোষণা করেন।
অসহযোগ আন্দোলনের এই কর্মসূচিকে ঘিরে রোববার (৪ আগস্ট) ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত বহু হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
দেশজুড়েই সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় রোববার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ করা হয়। এই সিদ্ধান্ত ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা ও উপজেলা সদরের জন্য কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য করুন