কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাজধানীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল

বিভিন্ন ধরনের সবজি নিয়ে বসে আছেন এক বিক্রেতা। ছবি : কালবেলা
বিভিন্ন ধরনের সবজি নিয়ে বসে আছেন এক বিক্রেতা। ছবি : কালবেলা

নিত্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূল থাকায় সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজি ও মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতিটি সবজি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বাড়লেও দেশি মুরগির দাম কিছুটা কমেছে।

শুক্রবার (২ আগস্ট) রাজধানীর শ্যামবাজার, সূত্রাপুর বাজার ও নয়াবাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম স্থিতিশীল ছিল। বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকা, প্রতিপিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, সজনা ১৬০ টাকা ও শসা ৬০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

নয়াবাজারে বাজার করতে আসা রাব্বি রহমান কালবেলাকে বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে বাজারে তুলনামূলক সবজির দাম কম। আবার কিছু কিছু সবজির দাম আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। তবে রাজধানীর বাজারগুলোতে আসতে হচ্ছে নানারকম ভয়ভীতি মধ্য দিয়ে। কারণ রাজধানীজুড়ে আন্দোলন আর সহিংসতার ভয় তো আছেই। তাই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সময় বাইরে থাকতে চাই না। দর-দাম করে সবজি নিচ্ছি কিন্তু দাম আরও কমলে ভালো হতো। বাজারগুলোতে ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা ও গাজর ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিন বাজারে লেবুর হালি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, আনাজি কলা প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এছাড়া মিষ্টিকুমড়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। বাজারগুলোতে লালশাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউশাক ৪০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। রায়সাহেব বাজারের সবজির খুচরা ব্যবসায়ী মো. আল আমিন বলেন, কয়েক দিন ধরে সবজির দাম তুলনামূলকভাবে কম। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় সবজির দাম কমেছে।

এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে আলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ প্রকার ভেদে ১৯০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও কাঁচামরিচ একই দামে বিক্রি হয়েছে। এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারগুলোতে সোনালি মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, দেশি মুরগি কেজিতে ৫০ কমে ৫৫০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩৩০ টাকা ও সাদা লেয়ার ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সূত্রাপুর বাজারে আসা আয়েশা আক্তার কালবেলাকে বলেন, বাজারে এখন সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম গত মাসের চেয়ে তুলনামূলক কম। কিন্তু আহামরি কম না। এই দাম এখনো একজন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নিচে। আজ দেখলাম বয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা। দোকানদার বলল, সামনের দিনে আরও বাড়তে পারে দাম। এভাবে চলতে থাকলে তো খুব সমস্যা। আমার পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস আমার হাজবেন্ডের ব্যবসা। কিন্তু গত ১৫-২০ দিন ধরে রাজধানীজুড়ে যে ঝামেলা হচ্ছে তাতে কোনো ধরনের ব্যবসা করার পরিবেশ নেই। প্রতিনিয়ত মানুষ আতঙ্কে থাকে। তাই আয়ের পরিমাণ ব্যয়ের চেয়ে কমেছে।

এদিন বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা প্রতি কেজি ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, হাঁসের ডিম ১৮০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

নয়াবাজারের মুরাগি ব্যবসায়ী হাসান আলী বলেন, বাজারে মুরগির দাম একটু বেড়েছে। তবে এটা খুব বেশি না। তবে এই দাম বাড়ার কারণ রাজধানীর বাজারগুলোতে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমেছে। তবে মুরগির দাম সব দিন এক রকম থাকে না।

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ও ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। এক কেজি শিং মাছ চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকার ভেদে) ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, দেশি মাগুর মাছ ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল মাছ ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের পাঙাস মাছ ১৯০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ ২২০ টাকা, কই মাছ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা মাছ ৬০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া রাজধানীর বাজারে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন ধরনের চালের দাম কেজিতে ২-৮ টাকা বেড়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ সুবিচার নিশ্চিত করা : আসিফ নজরুল

ধার-দেনা করে আলু চাষ, লাভের বদলে কাঁধে ঋণের চাপ

যে শঙ্কায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন টিউলিপ

তিন কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ৫

দাবানলে ৬০ লাখের বেশি মানুষ মারাত্মক ঝুঁকিতে

সরাইলে বিএনপির নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে ঝাড়ু মিছিল

মানিকগঞ্জে নিজ বাড়িতে নারীকে গলা কেটে হত্যা 

ভৈরবে আ.লীগ কার্যালয় থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

আন্দোলন-ধর্মঘটে ‘কার্যত অচল’ রাবি, ব্যাহত শিক্ষার পরিবেশ

রাজবাড়ীতে জমি বন্ধক নিয়ে গাঁজা চাষ, চাষি আটক

১০

টিউলিপের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ তদন্ত প্রতিবেদনে যা ছিল

১১

নারী উদ্যোক্তা তনির স্বামী মারা গেছেন

১২

ভারত থেকে এলো ২৪৫০ টন চাল

১৩

নারায়ণগঞ্জে আগুনে পুড়ল দুই কারখানা

১৪

উপসচিব বিতর্ক এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্যের বাস্তবতা 

১৫

কিশোরগঞ্জে হাসপাতালে ভুল ইনজেকশনে ২ রোগীর মৃত্যু

১৬

আবারও আসছে শৈত্যপ্রবাহ

১৭

দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে শক্তিশালী মালদ্বীপের পাসপোর্ট

১৮

কুয়াশা ও তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন বার্তা

১৯

দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন দাবানলকে ভয়াবহ করছে আরও

২০
X