কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতায় সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। পাশাপাশি দ্রুত বিচারও চেয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে দেশব্যাপী নৈরাজ্য, নাশকতা ও হামলায় সাংবাদিক নিহত-আহত এবং সংবাদ মাধ্যমের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের’ প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠন থেকে এ দাবি জানানো হয়। ডিইউজে এ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘বারবার সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটতেই থাকে। সেজন্য আমাদের একটাই দাবি, সেটি হলো স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল করতে হবে। দ্রুত এসব ঘটনার বিচার করতে হবে।’ বিভিন্ন গণমাধ্যমের মালিকপক্ষকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, যারা সাংবাদিকদের ওপরে হামলা করেছে, তাদের সংবাদ সংগ্রহ করা বন্ধ করুন।
বিএফইউজের মহাসচিব দ্বীপ আজাদ বলেন, ‘প্রতিবাদ করতে করতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেলেও আক্রমণকারীরা ক্লান্ত হয় না। এর কারণ হলো সাংবাদিক হত্যার বিচার হয় না। আমাদের চারজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ২১৮ জন সাংবাদিক সারা দেশে আহত হয়েছেন। সাংবাদিকদের আটটি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। ৩৮টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সাংবাদিক হত্যা এবং নির্যাতনের বিচার করতে হবে। আমরা নিহত ও আহত সাংবাদিকদের তালিকা করছি।’
সমাবেশে ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে যে সাংবাদিকরা আহত এবং নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং রাষ্ট্র যাতে তাদের দায়িত্ব নেয়, সেজন্য আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। যারা আহত-নিহত হয়েছেন আমরা এ ঘটনাগুলোর তীব্র নিন্দা জানাই।’
নিহতদের পরিবারকে রাষ্ট্রের সবধরনের সাহায্য করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা আহত হয়েছেন, তারা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সাহায্য করতে হবে। নিহত সাংবাদিক পরিবারগুলোর যে কোনো একজন সদস্যকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে হবে। প্রত্যেক সংবাদকর্মীর দায়িত্ব তাদের মালিককে গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে।’
সমাবেশে সাংবাদিকসহ যারা আহত ও নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণে সাংবাদিক নেতারা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন এবং দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। সমাবেশে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কুদ্দুস আফ্রাদ, খায়রুজ্জামান কামাল, তরুণ তপন চক্রবর্তী, এম শাজাহান মিয়া, শেখ জামাল, মানিক লাল ঘোষ, সুমি খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।