কোটা সংস্কার আন্দোলনে সৃষ্ট সহিংসতার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও মানসিকভাবে বিষাদগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের ভয় কাটিয়ে স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। এ বিষয়ে কয়েকটি সুপারিশ প্রস্তাব করেছেন তিনি।
সোমবার (২৯ জুলাই) গুলশানে নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ডিএনসিসি এলাকায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর উপাচার্য এবং অধ্যক্ষদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সৃষ্ট সহিংসতায় আহত ও নিহতদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যেন স্বাভাবিক জীবনযাপনে আসতে পারে, সে বিষয়ে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করব। ডিএনসিসি এলাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের উপাচার্য ও অধ্যক্ষদের সঙ্গে এটা আমাদের প্রথম সভা। আমরা এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে আরও সভা করব।’
এ সময় আলোচনায় কীভাবে শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে উপাচার্য ও অধ্যক্ষদের কাছ থেকে বিভিন্ন সুপারিশ এসেছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র।
সুপারিশগুলো তুলে ধরে মেয়র বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো এবং নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো; শিক্ষাঙ্গনে পড়াশোনার পাশাপাশি সংস্কৃতি ও খেলাধুলার ব্যবস্থা করা; শিক্ষার্থীদের ট্রমা কীভাবে দূর করা যায়, সেই ব্যবস্থা করা; সরকারি চাকরি ছাড়াও বিকল্প কর্মসংস্থান আছে সেটি শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারকে বোঝানো; ক্ষতিগ্রস্তদের (আহত-নিহত) আর্থিক সহায়তা দেওয়া; শিক্ষার্থীদের আইনগত সহায়তা দেওয়া; কেন এই সহিংসতার ঘটনা ঘটল সেটি গবেষণা করে বের করা; শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক উন্নয়নসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করা; পুনরায় পাঠদান কীভাবে শুরু করা যায় বা অনলাইনে পাঠদান শুরু করা যায় কি না সেটি ভেবে দেখা; সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের সঠিক পথে প্রভাবিত করা এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি কঠোর বক্তব্য না দিয়ে কোমলভাবে বক্তব্য দেওয়া।
এ সময় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে ধনী বাবা-মায়ের সন্তান মনে করা হয়; কিন্তু এটা একটা মিথ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাস করে বের হয়ে নিজেরাই চাকরির ব্যবস্থা করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন ও পরিবারকে স্বাবলম্বী করছেন। শিক্ষার্থীরা যেন বিভ্রান্ত না হয়। বিভ্রান্ত হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
আলোচনা সভায় আরও ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খান, ইউল্যাবের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি কাজী আনিস আহমেদসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের উপাচার্য এবং অধ্যক্ষরা।
মন্তব্য করুন