কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না, তাই দেশি-বিদেশি ঋণের ওপর সরকারকে বেশি ভরসা করতে হচ্ছে। বাজেটে অর্থের জোগান দিতে সরকারকে আগের চেয়ে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। একইসঙ্গে বিগত বছরগুলোতে নেওয়া ঋণ পরিশোধের চাপও বাড়ছে। ফলে প্রতি বছর সরকার যে ঋণ নিচ্ছে, তার বেশিরভাগই সুদ আসল পরিশোধেই ব্যয় হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সুদ পরিশোধের চাপ আরও বাড়ছে।
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে আড়াই লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪ দশমিক ৫ শতাংশের সমান।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের সময় এ প্রস্তাব তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অর্থমন্ত্রী হিসাবে এটি তার প্রথম বাজেট।
প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অন্যান্য বছরের মতো আগামী বাজেটেও জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে রেখেই অনুদানসহ ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ঘাটতি রাখা হয়েছে। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির অঙ্ক হচ্ছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এ হার গত বাজেটে ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ঘাটতির মধ্যে ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস হতে এবং অভ্যন্তরীণ উৎস হতে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে আসবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি এবং অন্যান্য খাত থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে।
এদিকে, আগামী বাজেটেও থাকছে ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ। মোট বাজেটের ২০ শতাংশই চলে যাবে সুদ পরিশোধে। আগামী অর্থবছর অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎসে সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ফলে সুদ খাতের ব্যয় বাজেটে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করবে। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎসে সুদ পরিশোধে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণের সুদে ব্যয় হবে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সুদ পরিশোধ বাবদ ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে করা হয় ১ লাখ ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা করা হয়।
মন্তব্য করুন