পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শীর্ষ কর্মকর্তার মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংক্রান্ত বিষয়টিকে গুজব বা গল্প রটানো হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে। সম্প্রতি এবিষয়ে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান জরুরি বৈঠক করেছেন।
তাদের মতে, বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের ইস্যুকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়িয়ে একটি চক্র বাজারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এতে পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার প্রভাব পড়ে বিনিয়োগকারীদের ওপর। সব সময় চক্রটি ফায়দা লুটে নেয়। এমন গুজব থেকে পুঁজিবাজারকে রক্ষা করতে গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, যে কোনো ধরনের গুজব সৃষ্টির প্রচেষ্টা বিএসইসি ও ডিএসইসি যৌথভাবে প্রতিহত করবে। উভয় প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারকে গতিশীল করতে এবং বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ স্বার্থ সংরক্ষণে দৃ্ঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দ্বন্দ্ব-সংক্রান্ত বিভিন্ন গল্প রটানো হচ্ছে। এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, এটি ভিত্তিহীন ও গুজব। একই মত দিয়েছেন, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামানও।
সম্প্রতি দেশের শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে দেয়া গুজবের কারণে। কয়েক দিন আগে ফ্লোর প্রাইস নিয়ে গুজব ছড়িয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছিল কারসাজি চক্র। তারপর জেড ক্যাটাগরির শেয়ার নিয়ে গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীল করে তুলে একটি চক্র। তা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এবার নতুন গুজব ছড়িয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও ডিএসই মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিএসইসির চেয়ারম্যান কমিশনে থাকছে না বলেও গুজব উঠেছে। এমন গুজব ছড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়টিও বরাবরের মতই গুজব বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে রমজানে শেয়ারবাজারে লেনদেনের সময় নিয়েও এক ধরনের গুজব ছড়ানো হয়। সাধারণত স্টক এক্সচেঞ্জই লেনদেনের সময় নির্ধারণ করতে পারে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অবহিত করতে হয়। যেহেতু দেশে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ সেহেতু দুটির লেনদেনের সময় একই হওয়া সুবিধাজনক। তা না হলে লেনদেন, সূচক ও মূল্যে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য সমম্বয় করেই লেনদেনের সময় কমিশন ঠিক করা দেয়।
এ বিষয়ে ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বাজারের সার্বিক স্বার্থে কাজ করি। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সর্বোচ্চ। করোনার মধ্যে গত তিন বছর কঠিন সময় পার করেছি। সবকিছু বন্ধ ছিল। এ সময় আমরা চেষ্টা করে বাজার চালু রেখেছি।
তিনি বলেন, কাজ করতে গেলে মতের ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে আইন সঙ্গতভাবে আমাদের কাজ করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, ডিএসইর সঙ্গে আমাদের কোনো দূরত্ব নেই। কমিশন এবং এক্সচেঞ্জ পুঁজিবাজারের জন্য একই উদ্দেশ্যে নিয়ে কাজ করে। বাজারের স্বার্থে গুজব গ্রহণ করা হবে না। দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। উভয় প্রতিষ্ঠান যুগপথভাবে নিরলস কাজ করছে।
মন্তব্য করুন